সৈন্য প্রত্যাহারে ভারতকে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের আল্টিমেটাম

দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপক টানাপোড়ন

প্রকাশিত: ৬:০৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২৪

ডেস্ক রিপোর্ট:

দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপক টানাপোড়েনের মাঝে এবার ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করে নিতে নয়াদিল্লিকে আল্টিমেটাম দিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। দ্বীপ দেশটি থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করে নিতে নয়াদিল্লিকে চূড়ান্ত সময়সীমা বেধে দিয়েছেন তিনি। মোহাম্মদ মুইজ্জু বলেছেন, আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সৈন্যদের মালদ্বীপ ছেড়ে চলে যেতে হবে। রোববার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

গত নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে চীনে গিয়ে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠক শেষে দেশে ফেরার পর এই আল্টিমেটাম দিয়েছেন মোহাম্মদ মুইজ্জু। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের পাবলিক পলিসিবিষয়ক কর্মকর্তা আবদুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম বলেছেন, ভারতীয় সেন্যরা মালদ্বীপে অবস্থান করতে পারবেন না। এটা প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ মুইজ্জু ও তার প্রশাসনের নীতি।

ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মালদ্বীপে বর্তমানে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ৮৮ সদস্যের উপস্থিতি রয়েছে। মালদ্বীপে কোনও বিদেশি সৈন্য থাকতে পারবে না বলে দুই মাস আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছিলেন, এটা নিশ্চিত করা হবে যে, মালদ্বীপের মাটিতে কোনও বিদেশি সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি থাকবে না।গত নভেম্বরের নির্বাচনে ভারতবিরোধী অবস্থান নিয়ে মালদ্বীপের ভোটারদের আকৃষ্ট করেছিলেন মোহাম্মদ মুইজ্জু। নির্বাচনী অঙ্গীকারের বাস্তবায়নে দেশটি থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের এই সময়সীমা বেধে দিয়েছেন তিনি।

সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি উচ্চ-স্তরের কোর গ্রুপ গঠন করেছে মালদ্বীপ ও ভারত। রোববার সকালে রাজধানী মালেতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে এই গ্রুপের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে ভারতীয় হাইকমিশনার মুনু মাহাওয়ারও উপস্থিত ছিলেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে আবদুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম বলেন, আলোচনার মূল এজেন্ডা ছিল ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান। ভারত সরকার তাৎক্ষণিকভাবে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বিষয়ে নিশ্চিত অথবা মন্তব্য করেননি।

মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি মুইজ্জুর অন্যতম প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে মালদ্বীপের তিন মন্ত্রীর বিতর্কিত পোস্ট ঘিরে দুই দেশের মাঝে কূটনৈতিক বিবাদ চরমে পৌঁছেছে। এর মাঝেই প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে চীন থেকে ফিরে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ভারতকে ইঙ্গিত করে মুইজ্জু বলেন, ‘‘আমাদের দেশ ছোট হতে পারে। কিন্তু আমাদের ধমক দেওয়ার লাইসেন্স তাদের দেওয়া হয় নাই। আমরা কারও বাড়ির উঠানে নই। আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র।’’

চীন সফরে গিয়ে মালদ্বীপে আরও বেশি বিনিয়োগ ও চীনা পর্যটক পাঠাতে বেইজিংয়ের প্রতি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান মুইজ্জু।