সৌদিতে আগুনে ৯ জনের মৃত্যু: এখন আমাদের কে দেখবে? আমরা চলবো কীভাবে?
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি:
আমার স্বামী পরিবারের হাল ধরতে বিদেশে গেছিল। এখন আমাদের কে দেখবে? আমরা চলবো কীভাবে? খাটের ওপর বসে থাকা অশ্রুসিক্ত আট বছরের একমাত্র মেয়ে নুসরাত জাহান সাইকাকে একহাতে জড়িয়ে ধরে আরেক হাত দিয়ে এভাবেই বুক চাপড়ে হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে শোকাহত পরিবারকে সান্তনা দিতে আসা প্রতিবেশী আর স্বজন পরিবারের দিকে তাকিয়ে প্রশ্নগুলো করছিলেন স্বামীহারা গৃহবধুর নাছিমা আক্তার।
সৌদি আরবের রিয়ার থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে দাম্মামের হুফুফ শহরে একটি ফার্নিচার কারখানায় আগুনে পুড়ে নিহত নয়জনের একজন সাইফুল ইসলাম ছিলেন নাছিমা আক্তারের স্বামী। নিহত সাইফুল ইসলাম ছিলেন রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী সাভারের বলিয়াপুরের মৃত আলাউদ্দিনের বড় ছেলে। শনিবার (১৫ জুলাই) রাতে সাভারের বলিয়াপুরে নিহত সাইফুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, গোটা পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
সাইফুল ইসলামের আট বছর বয়সী একমাত্র মেয়ে নুসরাত জাহান সাইকা চিৎকার করে আল্লাহর কাছে বাবাকে ফেরত চাচ্ছে। শোকে স্তব্ধ স্ত্রী নাছিমা আক্তার বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। মা-মেয়ের আর্তনাদে পুরো বাড়িতে কান্নার রোল চলছে। কান্নার শব্দে ভারী হয়ে উঠছে এলাকার পরিবেশ।
নাছিমা আক্তার বলেন, আমার স্বামী সাইফুল ইসলাম অভাবী সংসারের গোটা পরিবারের হাল ধরতে বিদেশে গেছিল। এখন আমাদের কে দেখবে? আমরা চলবো কীভাবে? কে আমাদের খাওয়াবে পড়াবে? খোঁজ-খবর নিবে? ফোনের রিংটোন আর কখনোই বাজবে না।
পাশেই নিহতের মা নবিজা বেগম বিলাপ করে বলছেন, আমার ছেলে মারা গেলো, তবে তাকে এক নজর দেখতে তার লাশটা যেন পাই। আমার ছেলের লাশটা আমি চাই। শেষবারের মতো তাকে দেখতে চাই। তোমরা আমার ছেলেকে এনে দাও।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ আট বছর দুই মাস যাবৎ সৌদি আরবে থাকতেন সাইফুল ইসলাম। ১৪ মাস আগে ছুটি নিয়ে একবার দেশে এসেছিলেন। তিনি সৌদি আরবে দাম্মাম শহরে ট্রাক চালাতেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রিয়াদ থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে দাম্মামের হুফুফ শহরের শিল্প এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে নয়জন কর্মী মারা যান।