স্ত্রী-সন্তানের মর্যাদা চাওয়ায় খুন করেন মাসুদ

প্রকাশিত: ৯:১৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
৮-১০ বছর ধরে ঢাকার আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন মো. মাসুদ মিয়া (৩৫)। ২০২২ সালের ফেব্র“য়ারিতে একই কারখানায় যোগদান করেন শান্তনা। এরপর মাসুদের সঙ্গে পরিচয় তার। এরপর তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আশুলিয়া এলাকায় একটি বাসাভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন তারা। একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত¡া হলে মাসুদকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন শান্তনা। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে শান্তনাকে হত্যা করেন মাসুদ। আজ মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ১৫ জুলাই রংপুরের পীরগঞ্জের খালাশপীর এলাকায় আখক্ষেত থেকে ৩০ বছর বয়সী এক নারী ও নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করে। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র‌্যাব।
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, সোমবার (১৭ জুলাই) রাতে র‌্যাব-১ এর একটি দল গাজীপুরের তারগাছ এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মো. মাসুদ মিয়াকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, একই কারখানায় চাকরির সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাসুদের তথ্যমতে শান্তনা বিবাহিতা এবং স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত।
খন্দকার আল মঈন বলেন, মাসুদ ও শান্তনা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আশুলিয়ায় একটি বাসাভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত¡া হন শান্তনা। এরপর মাসুদকে প্রতিনিয়ত বিয়ের জন্য চাপ দেন তিনি। এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে মাসুদ তার বাড়িতে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে শান্তনাকে ঢাকায় রেখে গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে যান। মাসুদের আগের বিয়ের বিষয়টি জানতেন না শান্তনা।
খন্দকার আল মঈন জানান, ১২ জুলাই মাসুদের সন্ধানে রংপুরে যান শান্তনা। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, মাসুদ বিবাহিত ও তার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এসময় শান্তনা তার গর্ভজাত সন্তানের স্বীকৃতি এবং তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। তখন মাসুদের প্রথম স্ত্রী ফরিদা তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য শান্তনাকে বিয়ের প্রতিশ্র“তি দেন মাসুদ। পরদিন ১৩ জুলাই মাসুদের খালা শান্তনাকে পীরগঞ্জ থেকে ঢাকার বাসে উঠিয়ে দেন। এসময় শান্তনার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করেন মাসুদ। তিনি তাকে বাস থেকে নেমে বাড়ি ফেরত আসতে বলেন। এসময় শান্তনা বাসস্ট্যান্ড থেকে মাসুদের বাড়ি যাওয়ার সময় পথে খালাশপীর নামক স্থানে একটি আখক্ষেতের কাছে যান। তখন কৌশলে শান্তনাকে আখক্ষেতে নিয়ে যান মাসুদ। এরপর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পেছন থেকে শান্তনার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে এবং গলা ও পেটে পা দিয়ে আঘাত করেন। এতে শান্তনার গর্ভজাত সন্তান ভ‚মিষ্ঠ হয় এবং উভয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়।