স্থান পাবে অভ্যুত্থান ও ১৬ বছরের নিপীড়নের চিত্র

প্রকাশিত: ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আগামী সপ্তাহে শুরু হচ্ছে গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে রূপান্তরের কাজ। এ জন্য স্থপতি, বিশেষজ্ঞ ও চিত্রাঙ্কন শিল্পীদের নিয়ে কমিটি করা হবে। রূপান্তরের পর গণভবনে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের নানা ঘটনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের গুম-খুন ও নিপীড়নের চিত্র রাখা হবে।

গতকাল শনিবার অন্তর্র্বতী সরকারের শিল্প, গণপূর্ত ও গৃহায়ন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে নিয়ে গণভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত গণভবনকে জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতনের আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ধরে রাখতে জাদুঘর করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিন উপদেষ্টা পরিদর্শন করেন।
নাহিদ বলেন, ‘এখানে প্রথমত ৩৪ দিনের পুরো সময়ের স্মৃতির দিনলিপি থাকবে। যারা নিহত হয়েছেন, তাদের তালিকা থাকবে, স্মৃতি থাকবে। এ আন্দোলন ছাড়াও গত ১৬ বছরের লড়াইয়ের একটি মুহূর্ত আমরা ৫ আগস্ট পেয়েছিলাম। এই ১৬ বছরে যে নিপীড়ন হয়েছে, যারা গুম হয়েছেন, তাদের তালিকা থাকবে। যারা বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন, এসব বিষয়ের একটি উপস্থাপনা থাকবে। এমনকি এখানে যে স্থাপনা এখন ভাঙা অবস্থায় রয়েছে, সেটিকে সেই অবস্থায় রেখে জাদুঘর করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা ৫ আগস্টের মুহূর্তটি পেয়েছি। সেটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া ও জনগণের বিজয় ধারণ করে রাখার জন্যই এটি জাদুঘর করা হবে। শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর বুকে জাদুঘরটি স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট, খুনি রাষ্ট্রনায়কের পরিণতির নিদর্শন হিসেবে থাকবে। জনগণই যে ক্ষমতার মালিক– তা এখানে এসে মানুষ দেখতে পাবেন। গণভবন জাদুঘরে রূপান্তরে শিগগিরই একটি কমিটি করা হবে।’
পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত জানিয়ে নাহিদ আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের তালিকা প্রায় শেষদিকে। চলতি মাসে শহীদ পরিবার নিয়ে স্মরণসভা করা হবে। সেখানে তালিকা প্রকাশ করা হবে। শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।’

এ সময় বিভিন্ন স্থানে হামলা-সহিংসতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছিলেন, গণভবনে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সময়ের অত্যাচারের স্মৃতি এবং আমাদের শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে একটি সুন্দর জাদুঘর করার বিষয়ে দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গণপূর্ত ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজটি করবে।