‘স্বচ্ছতা আনতে দুদককে সহযোগিতা করবে বিসিবি’

প্রকাশিত: ২:১০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক:

 

গেল মঙ্গলবার হঠাৎ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) হানা দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তারা। তাদের আকস্মিক আগমনে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গিয়েছিলেন বিসিবি কর্তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক, কেননা দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি কোনো দিন। সেদিন প্রায় দেড় ঘণ্টার এই অনুসন্ধান শেষে দুদক কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তারা বিসিবির কাছে তথ্য চেয়েছেন। সেগুলো হলো-মুজিব শতবর্ষ উদযাপনে খরচের গরমিল, বিপিএলের তৃতীয় থেকে দশম আসর পর্যন্ত টিকিট বিক্রির হিসাব ও তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেটের।

যদিও সেই সময় দেশে ছিলেন না বিসিবির সভাপতি ফারুক আহমেদ। আইসিসির সভা শেষে তিনি ঐদিন রাতেই দেশে ফিরেছিলেন। তবে আসার পরও এ বিষয়ে কোনো কিছুই জানাননি। অবশেষে নীরবতা ভেঙেছেন তিনি। জানিয়েছেন বিসিবির ‘কালো বিড়াল’ বের করার জন্য দুদককে সহযোগিতা করার কথাও।

গতকাল রাজধানীতে শিশুদের একটি খেলা উদ্বোধন করতে গিয়ে বিসিবিতে দুদকের অনুসন্ধান নিয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নের মুখোমুখি হন ফারুক আহমেদ। যেখানে দুদককে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার কথা বলেছেন তিনি। যদিও জানেন না কার কিংবা কোন অভিযোগের ভিত্তিতে এসেছিলেন তারা। ফারুক বলেন, ‘যেদিন দুদক বিসিবিতে অভিযান চালিয়েছে, সেদিন রাতেই আমি দেশে ফিরেছি। আমার মনে হয়েছে, তারা কারও নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে এসেছে, কেউ না কেউ অভিযোগ জানিয়েছে তাদের কাছে। বোর্ড হিসেবে আমরা সর্বাত্মকভাবে তাদের সহযোগিতা করব, করা হবে। আমি সিইওকে বলে দিয়েছি, তারা যেসব নথিপত্র চেয়েছে, সেগুলো দিয়ে সহযোগিতা করতে। সিইও ইতিমধ্যে সে বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। এখনই বলা যাবে না তারা কী কী অনুসন্ধান করছে এটা সময়ই বলে দেবে।’

এ দিকে ঘরোয়া লিগে পাতানো ম্যাচের ইস্যুতে গত সপ্তাহ ধরেই সরগরম দেশের ক্রিকেটাঙ্গন। বছরের শুরুতে প্রথম অনুষ্ঠিত হওয়া বিপিএল দিয়ে যা শুরু হয়েছিল। তারপর আবার চলমান ডিপিএলে একটি ম্যাচ দৃষ্টিকটু আউট নিয়ে সবার মনে ফের পাতানো ম্যাচের সন্দেহ হানা দেয়। শুধু তা-ই নয়, আরেকটি ক্লাবের কোচ (পারটেক্স স্পোটিং ক্লাব) তো সরাসরি খেলোয়াড়দের আচরণে সন্দেহ পোষণ করেছেন। সব মিলিয়ে ক্রিকেট পাড়ায় চলছে এই বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা।

এ নিয়ে অবগত রয়েছেন বিসিবি সভাপতিও, জানিয়েছেন তদন্ত চলমান আলামত পেলেই হবে কড়া শাস্তি। তিনি বলেন, ‘এবার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডিভিশনে পাতানো খেলার প্রবণতা কিছুটা কমেছে। তবে একবারে কিন্তু বন্ধ হয়ে যায়নি। কেননা কিছু কিছু দল আছে… তারা বাছাইপর্বে দুটি করে দল তুলেছে। তারা কী উদ্দেশ্য নিয়ে এটা করেছে? তারা কিছু খেলা খেলেছে আরও কিছু খেলা থাকবে সেগুলোতে আমাদের দৃষ্টি থাকবে। পাতানো খেলা থাকলে কখনোই ভালো খেলোয়াড় পাওয়া যাবে না। কারণ সেরা ব্যাটারকে বলা হবে ডাক করে আউট হতে, সেরা বোলারকে বলা হবে ওয়াইড বা নো বল দিয়ে উইকেট না নিতে। এটা তো খেলা না। আমরা এটা বন্ধ করতে চাই। একটা টেকনিক্যাল কমিটি আছে। তদন্ত হবে, তদন্তে যদি কোনো অপরাধ বা অনিয়ম প্রমাণিত হয়। তাহলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’