স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও গোয়েন্দা প্রতিবেদন পেলেই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
সাজ্জাদ হোসেন:
৪৩তম বিসিএসের সব কার্যক্রম শেষ। এখন প্রার্থীরা নিয়োগের অপেক্ষায় আছেন। কখন প্রজ্ঞাপন হবে আর কখন তাদের পদায়ন হবে, এ নিয়ে উৎকণ্ঠায় তারা। এই সময়ে তাদের প্রতি বার্তা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
অন্তর্র্বতী সরকারের অধীন ৮ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যেসব কাজ করেছে, তার একটি বিবরণ প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছে, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য উপস্থিত হওয়ার ক্ষেত্রে সন্ত্রাসীদের হাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে। তাই যারা স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উপস্থিত হতে পারেননি, তাদের পুনরায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা গ্রহণের জন্য পিএসসি ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৫৫ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে প্রাপ্ত তথ্য পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে যাচাই-বাছাই করার জন্য স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাওয়ামাত্র নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
৪৩তম বিসিএস থেকে ২ হাজার ৮০৫ জনকে নিয়োগের জন্য ৯ মাস আগে সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। কিন্তু এখনো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন না হওয়ায় নিয়োগের আশায় বসে থেকে হতাশ হয়ে পড়েছেন সুপারিশপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীরা। দ্রুত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন সুপারিশপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীরা।
২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ৪৩তম বিসিএস থেকে ২ হাজার ৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। সিদ্ধান্ত অনুসারে, ২ হাজার ১৬৩ জনকে ক্যাডার পদে এবং ৬৪২ জনকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বরে। সেই হিসাবে সাড়ে তিন বছর পার হয়ে গেলেও চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি।
৪৩তম বিসিএসে ২ হাজার ১৬৩ জন ক্যাডার পদের মধ্যে সর্বোচ্চ শিক্ষা ক্যাডারে ৮০৩ জন, প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫ জন, পুলিশ ক্যাডারে ১০০ জন, কর ক্যাডারে ১০১ জন, তথ্য ক্যাডারে ৪৩ জন এবং সহকারী ডেন্টাল সার্জনে ৭৫ জনকে সুপারিশ করা হয়েছে।
২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর দেশের সব বিভাগীয় শহরে একযোগে ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি প্রিলিমিনারির ফলাফল প্রকাশিত হয়, যাতে উত্তীর্ণ হন ১৫ হাজার ২২৯ প্রার্থী। ২০২২ সালের জুলাইয়ে পিএসসি লিখিত পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করে এবং ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে, এতে উত্তীর্ণ হন ৯ হাজার ৮৪১ জন।
৪৩তম বিসিএসে সুপারিশ পাওয়া বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী বলেন, দীর্ঘসূত্রতার কারণে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ক্ষোভ আর হতাশা দিন দিন বাড়ছে। চাকরিতে যোগ দিতে না পারায় নিদারুণ কষ্টে দিন পার করছেন অনেকে। বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে চাকরিতে যোগদান করা নিয়ে নানা ব্যঙ্গাত্মক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিসিএসের প্রজ্ঞাপন প্রকাশে দেরি হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও নানা কথা হচ্ছে। অনেকে না জেনেই অনুমাননির্ভর তথ্য শেয়ার করছেন গেজেটের সম্ভাব্য সময় নিয়ে, যা উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বিভ্রান্তিতে ফেলছে। কেননা গেজেটের সম্ভাব্য সময়ের ওপর ভিত্তি করে অনেকের বর্তমান চাকরি থেকে অব্যাহতি নেওয়ার বিষয়টি জড়িত।