স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা খাগড়াছড়িতে

প্রকাশিত: ১:০০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২২, ২০২৪

খাগড়াছড়ি  প্রতিনিধি:

দুইদিন বৃষ্টিপাতের মাত্রা কম থাকার কারণে চেঙ্গী, মাইনী, ফেনী, পিলাক ও ধুরুং নদীতে পানি কিছুটা কমার পর বন্যার্থরা আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরে গেলেও নতুন করে গত ২৪ ঘন্টার বৃষ্টিতে আবারও বন্যাকবলিত হয়েছে খাগড়াছড়ি জেলার অন্তত দেড় শতাধিক পাড়া গ্রাম।

জেলা শহরের আশপাশের পাড়া গ্রামসহ শহরের প্রধান সড়কগগুলো এখন বন্যার পানিতে ডুবে আছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, কুটির শিল্প অফিসসহ অসংখ্য সরকারি আধা সরকারি স্থাপনা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। বর্ষণে নির্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অন্তত তিন শতাধিক পরিবার।
খাগড়াছড়িতে প্রায় দশ দিন ধরে চলা ভারী বর্ষণজনিত পাহাড়ী ঢলে চেঙ্গী, ফেনী ও মাইনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পাহাড়ী শহর খাগড়াছড়ি ভয়াবহ বন্যার শিকার হলো। দশ দিনের ব্যবধানে পর পর তিন দফা ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে কমপক্ষে চারশ পরিবার।

ভোর থেকে খাগড়াছড়ি সদরের মুসলিমপাড়া, মেহেদীবাগ, কালাডেবা, গঞ্জপাড়া, ঠাকুরছড়াসহ চেঙ্গী ও দীঘিনালার মাইনি নদীর পাড়ের নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে। গত দুই মাসের ব্যবধানে তিনবার পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন শহরতলী ও পৌর এলাকার নদী ও ছড়ার পাড়ে বসবাসকারী হাজার হাজার বাসিন্দা। জেলা শহরের উত্তর গঞ্জপাড়ায় পানি বন্দীদের উদ্ধারে নৌকা নিয়ে কাজ শুরু করেছে স্থানীয় সেনাবাহিনী ।
এভাবে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় মাটিরাঙ্গার তাইন্দং ফেনী নদীর ও দীঘিনালার মাইনী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দীঘিনালার মেরুং ও কবাখালীর নদী পাড়ের কৃষি জমিতে পানি উঠে বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। চেঙ্গী, মাইনী, ফেনী নদী ও ছড়ার পাড়ে বসবাসকারী লোকজন আতঙ্কে দিন পাড় করছে।

ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসের ঝুঁকি রয়েছে। গুইমারা ও জালিয়াপাড়ায় পাহাড়ী ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক গ্রামীণ রাস্তাঘাট। পানিতে ডুবে আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যোগাযোগ বন্ধ হয়ে আছে জালিয়াপাড়া-সিন্দুকছড়ি রাস্তায়। মাটিরাঙ্গার তবলছড়ির আমতলী গ্রামে বন্যার পানির তোড়ে ধসে গিয়েছে ১৬টি পরিবারের বাড়ীঘর। মহালছড়ির পাকুজ্যাছড়ি সিলেটীপাড়া, চট্টগ্রাম পাড়ার বাসিন্দারাও পানিবন্দী হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

ইতোমধ্যে স্থানীয় বানবাসী লোকজন এলাকার আশেপাশে সরকারী আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াত ও স্থানীয় প্রশাসন আশ্রীতদের মাঝে শুকনা ও রান্না করা খাবার বিতরণ করছে।