হকিতে কলঙ্ক, কে চাইবে জবাব

প্রকাশিত: ১২:৩৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক:

 

বাংলাদেশের হকির একটা জায়গা ছিল, এশিয়া কাপ হকিতে খেলত। গত চার দশকের বেশি সময় বাংলাদেশের হকি, এশিয়ার মর্যাদার আসরে খেলে আসছিল। এএইচ কাপ হকির সেমিফাইনালে ওমানের কাছে হেরে এশিয়া কাপের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়েছে। অতীতে হকিতে সবসময় নানা রকম দ্বন্দ্ব হয়েছে, মতপার্থক্য হয়েছে, খেলোয়াড় বনাম কর্মকর্তাদের মধ্যে কথার যুদ্ধ হয়েছে।

কিন্তু এশিয়া কাপ হকি থেকে বাদ পড়েনি বাংলাদেশ। ওই একটা জায়গায় বাংলাদেশের হকির স্বার্থটা সবাই মিলে রক্ষা করে আসছিল। প্রতিবারই এশিয়া কাপ হকিতে খেলছিল বাংলাদেশ। চার দশক পর প্রথম বার এশিয়া কাপ হকিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারল না। কী লজ্জা! যেখানে ফেডারেশন সভাপতি হাসান মাহমুদ খাঁন হকির উন্নয়নে আন্তরিকতার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করছেন আর অন্যদিকে কিছু কর্মকর্তা, কোচ, খেলোয়াড়রা দেশের হকির মানসম্মান ধূলিস্যাৎ করে দিয়ে ইন্দোনেশিয়া হতে খালি হাতে ফিরছেন। যে দলটি বার বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে এসেছে, সেই দল নানা অজুহাত দেখানোর পরিকল্পনা নিয়ে দেশে ফিরছে।

ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সার্চ কমিটি গঠন করেছিল। হকি ফেডারেশন সার্চ কমিটির হাতেই গড়া। গঠিত কমিটির বিভিন্নজনকে নিয়ে নানা সমালোচনা হলেও সার্চ কমিটির কর্মকর্তা আশার বাণী শুনিয়ে ছিলেন। তারা ভালো করবেন।’ ভালোর চিত্র কি এটাই। এশিয়া কাপে খেলতে না পারার কলঙ্ক লেপন করা। এর দায়ভার কে নেবে। কে চাইবে জবাব।

একটা দল যখন ব্যর্থ হয় তখন তার পেছনের নানা কথা নতুন করে সামনে এসে দাঁড়ায়। দল গঠনে অনিয়ম ছিল কি না, প্রশিক্ষণ ঠিকঠাক মতো হয়েছিল কি না, শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা, খেলোয়াড়দের জন্য প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধাগুলো ছিল কি না, ম্যাচের আগে দলের মধ্যে কোনো সমস্যা তৈরি হয়েছিল কি না। কোথায় গলদ ছিল, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে আসে সামনে।

বাংলাদেশ হকির দুরবস্থা মেনে নিতে পারছেন না জাতীয় দলের প্রথম অধিনায়ক আব্দুস সাদেক। তিনি বললেন, ‘মন মেজাজ খারাপ। এভাবে ভালো থাকা যায় না। যেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে খেলতে গিয়েছে এটা হয় না। কিছু প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা দরকার ছিল।’

তিনি বলেন, ‘শুনলাম ফেডারেশনের সেক্রেটারি নাকি বলেছেন টাকা ছিল না। তাই প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলা হয়নি। এটা প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলতে পারবে না, এটা কী করে হয়। এটা কোনো কথা হলো। এভাবে দেশের হকি হয় না। আমার টাকা নেই বলে কি আমি প্রিপারেশন নিতে পারব না? তাহলে খেলা ছেড়ে দেন।’

দল গঠন নিয়ে আপত্তি আছে সাবেক এই তারকার। রাসেল মাহমুদ জিমিকে দলে নেওয়া হয়নি। জিমি সম্পর্কে আব্দুস সাদেক বলেন, ‘জিমি এই সেঞ্চুরির বেস্ট প্লেয়ার। গত ২০ বছরেও এমন খেলোয়াড় আসেনি। একটা ছেলেকে ট্রায়ালেও ডাকবে না, এটা হয় না।’ আব্দুস সাদেক বলেন, ‘আমি ফেডারেশন সভাপতির সঙ্গে কথা বলব। সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। আমার টাকা নেই বলে বসে থাকলে তো হবে না।’

এডহক কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র কিছু দিনের মধ্যে ধপাস করে হকিটা পড়ে যাবে তা কল্পনার অতীত। এখান থেকে ফেরার পথ কোথায় পাবে বাংলাদেশ, সেটা একটা প্রশ্ন। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে সাংগঠনিক দক্ষতা না থাকলে সবাইকে দিয়ে সবকিছু হয় না।