হত্যাকারীদের সুষ্ঠু বিচারের দাবি শহীদ পরিবারের স্বজনদের

প্রকাশিত: ৬:২১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জুলাই বিপ্লবে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী ও হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্রুত শনাক্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের স্বজনরা।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠনকালে তারা এমন দাবি জানান।

আন্দোলনে শহীদ আল মানারাত ইন্টারন্যাশনালের শিক্ষার্থী আহনাফ আবিরের বোন বলেন, ৫ আগস্ট স্বাধীনতার সুখে সবাই যখন উচ্ছ্বাস করছিল তখন আমি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে পারছিলাম না। কারণ আমার ভাই তখনও আন্দোলনে ছিল। আজকেও সবাই খুশিমনে এখানে এসেছে কিন্তু আমি খুশি হতে পারছি না। কারণ আমার একমাত্র ভাই আন্দোলনে শহীদ হয়েছে। এটা ভাবলেই আমার বুক ভারী হয়ে আসে। শহীদ হওয়ার আগে আমার ভাইয়ের আঙুলে গুলি লেগেছিল। সেটার ছবি তুলে লিখে সে পোস্টও দিয়েছিল। এরপর আশুলিয়া পুলিশ সেদিন আত্মসমর্পণ না করে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালালে আমার ভাই শহীদ হয়।
তিনি বলেন, সেদিন সকালে ভাইয়ের সঙ্গে আমার অনেকক্ষণ কথা হয়েছিল। আমি তাকে সাবধান হতে বলেছিলাম। কিন্তু সে বলেছিল ভাগ্যে যা আছে তা-ই হবে। বিকেল ৫টার দিকে ফোন দিলে মাত্র ৮ সেকেন্ডে সে ভালো আছে বলে আমাদের জানায়। কিন্তু ৬টার দিকে রাজধানীর হাবিব মেডিকেল থেকে জানানো হয় আমার ভাই শহীদ হয়েছে। মেডিকেলে লাশ রাখার জায়গা না থাকায় তাকে ভার্সিটির বাসের মেঝেতে রাখা হয়। আমার ভাইয়ের রক্তে ভার্সিটির বাসের মেঝে ভিজে গিয়েছিল। তার নিথর দেহ দেখে আমরা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে আবার নতুন করে পুনর্গঠন করতে হবে। আমার ভাইসহ এই গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছে তাদের রক্তের বিনিময়ে গড়া দেশকে সুন্দর দেশ হিসেবে দেখতে চাই। এদেশে এখনো স্বৈরাচাররা রয়ে গেছে। যেসব প্রশাসনের লোক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা হত্যার নির্দেশ ও হত্যায় অংশ নিয়েছেন তাদের বিচার যেন সঠিকভাবে করা হয় সেই দাবি জানাই।
আন্দোলনে শহীদ রায়হানের বোন স্বর্ণা আক্তার বলেন, আমার ভাইয়ের হাত ভাঙা ছিল। গত ৫ আগস্ট ডাক্তার দেখাতে গিয়ে সে মুগদা মেডিকেলে গেলে পুলিশের গুলিতে আহত হয়। পরে হাসপাতাল থেকে আমাদের কল দিয়ে জানানো হয় আমার ভাই শহীদ হয়েছে। আমার ভাইকে নৃশংস ও জঘন্যভাবে মারা হয়েছে। তার সাদা শার্ট রক্তে লাল হয়ে গেছে। আমরা তার হত্যার বিচার দাবি জানাই। তাছাড়া এই আন্দোলনে যারা শহীদদের ওপর গুলি করেছে বা অন্যভাবে হত্যায় অংশ নিয়েছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।