নিজস্ব প্রতিবেদক:
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার প্রায় দ্বিগুণের। এতে প্রধান মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। তবে বেড়েছে শরিয়াহ্ সূচক। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের মধ্যেই দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে ৮টি প্রতিষ্ঠান। লেনদেনের এক পর্যায়ে এই ৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের বিক্রেতা মূল্য হয়ে পড়ে।
ডিএসইতে মূল্যসূচক মিশ্র থাকলেও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম। তবে দুই বাজারেই বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায, মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানর শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। সেই সঙ্গে লেনদেনেও ভালো গতি দেখা যায় লেনদেনের শুরুতেই। প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ২০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়।
শুরুতে দেখা দেওয়া লেনদেনের এই গতি অব্যাহত থাকে শেষ পর্যন্ত। তবে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় আসতে থাকে। এতে দেখতে দেখতে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। তবে এর মধ্যেও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাতে থাকে কয়েকটি কোম্পানি।
এর মধ্যে ৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এমনকি কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রির ঘরও শূন্য হয়ে পড়ে। এই ৮টি প্রতিষ্ঠান হলো- এশিয়া প্যাসেফিক ইন্স্যুরেন্স, আজিজ পাইপ, দেশবন্ধু পলিমার, আরডি ফুড, খান ব্রাদার পিপি ওভেন ব্যাগ, মিডল্যান্ড ব্যাংক, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং এবং কে অ্যান্ড কিউ।
দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এই ৮ প্রতিষ্ঠান দাপট দেখালেও দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ৬৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৬টির। আর ১৯২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১০ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৫১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৮৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচক মিশ্র থাকলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৯৩২ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১১১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬৭ কোটি ৩১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান আরডি ফুডের ৫৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৩ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- খান ব্রাদার পিপি ওভেন ব্যাগ, মিডল্যান্ড ব্যাংক, লুব-রেফ বাংলাদেশ, এমারেল্ড অয়েল, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন এবং বিচ হ্যাচারি।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭১টির এবং ৮৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা।