হামাস যোদ্ধাদের হাতে অত্যাধুনিক ইসরায়েলি তাভর রাইফেল

প্রকাশিত: ১:০১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামাসের হাতে বন্দি থাকা চার ইসরায়েলি নারী সেনা সদস্যকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার পর এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় চার বন্দিকে মুক্তি দিলো হামাস।

শনিবার গাজা শহরের প্রাণকেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইসরায়েলি চার বন্দিকে নিয়ে আসা হয়। হামাসের সশস্ত্র সদস্যরা সেখানে ছিলেন এবং সেখানেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর এলিট যোদ্ধাদের হাতে অত্যাধুনিক ইসরায়েলি তাভর রাইফেল দেখা যায়।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ক্ষমতার এক নাটকীয় প্রদর্শনীতে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের অভিজাত যোদ্ধারা গাজা শহরে চারজন নারী ইসরায়েলি সৈন্যকে হস্তান্তরের সময় ইসরায়েলি তাভর রাইফেল নিয়ে হাজির হয়েছিলেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলার সময় গাজার কাছে অবস্থিত ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটি এবং বসতিগুলোতে আক্রমণের সময় হামাস এসব রাইফেলগুলো জব্দ করেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে চার সৈন্যকে হস্তান্তর করার জন্য গাজা শহরের প্যালেস্টাইন স্কোয়ারে স্থাপিত মঞ্চে আনা হলে তাদের পাশে থাকা হামাসের যোদ্ধাদের এই অস্ত্রও কর্যত সবার নজরে আসে। মূলত ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামলা করার পর যাদের আটক করে নিয়ে এসেছিল হামাস, তাদের মধ্যে এই চারজনও ছিলেন।

ইসরায়েলি সংবাদওয়েব ওয়ালার সামরিক সংবাদদাতা আমির বোহবোট একটি সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছেন, “ইসরায়েলের নারী সৈন্যদের হস্তান্তর প্রক্রিয়ার সময় সেখানে অবস্থানের জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিজাত ইউনিটের তাভর রাইফেল বহনকারী অভিজাত ইউনিটের যোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্ত করে হামাস। এই রাইফেলগুলো সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে জব্দ করা হয়েছিল।”

ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির প্রথম পর্যায়ে শনিবার ভোরে হামাস চার নারী ইসরায়েলি সৈন্যকে মুক্তি দিয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্ত সৈন্যরা নাহাল ওজ ঘাঁটির ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নজরদারি ইউনিটের সদস্য।

ইসরায়েলি সামরিক ইউনিফর্ম পরা চার মুক্তিপ্রাপ্ত সৈন্য স্কোয়ারে স্থাপিত একটি মঞ্চে হাসিমুখে জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন এবং পরে তাদের ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রসের (আইসিআরসি) প্রতিনিধিদের কাছে স্থানান্তর করে হামাস।

ইসরায়েলি চ্যানেল ১২ বলেছে, “ইসরায়েলি সৈন্যদের মুক্তির দেওয়ার জন্য আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি গাজা শহরের প্যালেস্টাইন স্কোয়ারে খুব সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পিত এবং কার্যকর করেছে হামাস। হামাস এই নাটকীয় মুহূর্তটিকে প্রচারের বার্তা দেওয়ার জন্য কাজে লাগিয়েছে।”

ইসরায়েলি চ্যানেল জানিয়েছে, “নিয়ন্ত্রণ ও শ্রেষ্ঠত্বের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে হামাস এই স্কোয়ারের ডিজাইনে উল্লেখযোগ্য সম্পদ বিনিয়োগ করেছে। নারী সৈন্যদের মঞ্চে আনা হয়েছিল, যেখানে তারা একে অপরের হাত ধরেছিলেন, হাসছিলেন এবং জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়ছিলেন।”

এদিকে গাজায় আটক বেসামরিক বন্দি আরবেল ইয়েহুদকে মুক্তি না দেওয়ায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে ইসরায়েল। এর জবাবে ইসরায়েল বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিরতে এখনও অনুমতি না দেওয়ার কথা জানিয়েছে।

হামাস বলছে, ফিলিস্তিনিদের উত্তরাঞ্চলে ফিরতে না দিতে গুরুত্বপূর্ণ করিডোর বন্ধ রাখার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল নিজেই তার পায়ের নিচে মাটি খুঁড়ছে। সমঝোতা বাস্তবায়নে বাধার জন্য ইসরায়েলই দায়ী থাকবে।