হাসতে হাসতে প্রিজন ভ্যানে ওঠেন শাজাহান খান

প্রকাশিত: ৩:২২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান ‘গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ’ মামলার আসামি। এই মামলার শুনানিতে সাবেক এই মন্ত্রীসহ ১৬ জনকে আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে যখন তাকে প্রিজন ভ্যানে ওঠানো হচ্ছিল তখন তিনি হাসতে হাসতে গাড়ির দিকে যান এবং কয়েকজনের সঙ্গে সালাম ও কুশল বিনিময় করেন।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে এ চিত্র দেখা যায়।

ট্রাইব্যুনাল থেকে বের করে শাজাহান খানকে দুই পুলিশ সদস্য নিয়ে যান প্রিজন ভ্যানের সামনে। প্রিজন ভ্যানে হেঁটে যাওয়ার সময় শাজাহান খান তার ডান পাশে থাকা এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে উচ্চস্বরে হাসাহাসি করে কথা বলছিলেন। সেই মুহূর্তে ট্রাইব্যুনালের সামনে উপস্থিত থাকা কয়েকজন প্রশ্ন করে ‘শাজাহান ভাই কেমন আছেন’? জবাবে শাজাহান খান তাদের সালাম দিয়ে হাসতে হাসতে গাড়িতে উঠে যান। এরপর শাজাহান খানসহ আরও কয়েকজন হেভিওয়েট আসামিকে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ ত্যাগ করে প্রিজন ভ্যানটি।এর আগে সকালে জুলাই-আগস্টে ‘হত্যা-গণহত্যার’ মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ মোট ১৬ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে গিয়ে ‘গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ’ সংঘটনের অভিযোগে গত ১৭ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।

এরপর গত ২৭ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ১৮ নভেম্বর সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়।