হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ভাড়া দ্বিগুণ করার প্রতিবাদ

প্রকাশিত: ৩:২১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক:

হিমাগারে আলু সংরক্ষণে কেজি প্রতি ভাড়া ৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা করার প্রতিবাদ জানিয়ে আলু চাষিদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক খেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বজলুর রশীদ ফিরোজ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী বিভাগসহ বিভিন্ন অঞ্চলে গত কয়েক বছর ধরে ব্যাপকভাবে আলুর চাষ হচ্ছে। বেশি দামে বীজ, সার কিনে, জমি লিজ নিয়ে কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এবারে প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয়েছে ৩২ থেকে ৩৩ টাকা। অথচ বাজারে এখন পাইকারি আলু বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকায়। এতে দাম কম থাকায় চাষিদের বিঘাপ্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। হিমাগারেও সংরক্ষণ করতে নানা বিড়ম্বনা ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। হিমাগারের মালিকরা এ বছর কেজি প্রতি ভাড়া দ্বিগুণ অর্থাৎ ৮ টাকা করেছে। একদিকে বস্তা প্রতি ভাড়া দ্বিগুণ, তার সঙ্গে অগ্রিম বুকিং বাবদ ১০০ টাকা নেওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। ৫০ কেজির আলুর বস্তায় কৃষককে গুনতে হবে ৪০০ টাকা। এরইমধ্যে রাজশাহীর মোহনপুরে রাস্তায় আলু ফেলে দিয়ে কৃষকরা বিক্ষোভ করেছেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় মহাসড়ক অবরোধ করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কৃষকরা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, একদিকে সার, বীজ, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম বাড়ানোর ফলে উৎপাদনের খরচ বাড়ছে; অন্যদিকে উৎপাদিত ফসলের দাম না পাওয়ায় কৃষকরা ক্ষেতেই ফসল নষ্ট করে দিচ্ছেন। সরকার যদি বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে কৃষকদের থেকে ন্যায্য দামে কেনার ব্যবস্থা না করে তাহলে কৃষকরা দাম না পাওয়ায় উৎপাদনে আগ্রহ হারাবে। ফলে দেশে খাদ্য নিরাপত্তায় সংকট দেখা দেবে।

 

সংগঠনের পক্ষ থেকে যেসব দাবি জানানো হয় সেগুলো হলো-

১) প্রতি উপজেলায় ক্রয়কেন্দ্র খুলে উৎপাদক কৃষকের কাছ থেকে লাভজনক দামে সরকারি উদ্যোগে আলু ক্রয় করতে হবে।

২) হিমাগারে বস্তাপ্রতি অগ্রিম বুকিং বাবদ ১০০ টাকা নেওয়া এবং ভাড়া কেজি প্রতি ৪ টাকা থেকে ৮ টাকা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। হিমাগারের ভাড়া কমিয়ে কেজি প্রতি ২ টাকা করতে হবে। উৎপাদক কৃষকের জন্য হিমাগারে ৭০ শতাংশ বরাদ্দ রাখতে হবে। হিমাগার মালিক, ব্যবসায়ী-মজুতদার সিন্ডিকেট গোষ্ঠীর দৌরাত্ম্য রোধ করতে হবে।

৩) টিসিবির ট্রাকে এবং খোলা বাজারে চাল ও অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে আলু দিতে হবে।

৪) সরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত হিমাগার নির্মাণ করতে হবে।

৫) আলু, সবজি, ধান, ভুট্টাসহ ফসলের লাভজনক দাম নিশ্চিত করতে উৎপাদক সমবায় ও ক্রেতা সমবায় গড়ে তুলতে হবে।