১০ মিনিটে ১১০ ভরি সোনা চুরি করে ‘আঙুল কাটা গ্রুপ’

প্রকাশিত: ৬:০৮ অপরাহ্ণ, মে ৯, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি,বগুড়াঃ  

বিভিন্ন এলাকা থেকে একত্রিত হয়ে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো রেকি করে ‘আঙুল কাটা গ্রুপ’। কিছুদিন পরে সেখানে গিয়ে সুযোগ বুঝে মাত্র ১০ মিনিটে চুরি করে সটকে পড়ে চক্রটি। তাদের মূল টার্গেট সোনা বা মুঠোফোনের দোকান। বগুড়া জেলা পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই চোর চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৭ ভরি সোনাসহ চুরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- কুমিল্লার মুরাদনগরের ‘আঙুল কাটা গ্রুপের’ প্রধান রুবেল ওরফে আঙুল কাটা রুবেল (২৭), একই জেলার দক্ষিণ সদরের শাহজালাল (৪৬) ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ইব্রাহিম নয়ন (৩০)। তাদের বিরুদ্ধে সারাদেশের বিভিন্ন থানায় ২ থেকে ১২টি চুরির মামলা রয়েছে।

পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, গত ২০ এপ্রিল বগুড়া শহরের নিউ মার্কেটের আল-তৌফিক জুয়েলার্স নামে একটি সোনার দোকানে চুরি হয়। চোর চক্রের সদস্যরা ওই দোকানের শাটারের তালা কেটে ১১০ ভরি সোনা চুরি করে। সময় নেয় মাত্র ১০ মিনিট। এ ঘটনায় পরদিন ২১ এপ্রিল সদর থানায় মামলা হয়। এর পর থেকে তাদের ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ। ঘটনাস্থলের আশপাশের দুইটি সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রায় এক সপ্তাহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে চোর চক্রটির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ চোর দলের সদস্য। দলটির প্রধান আঙুল কাটা রুবেল। তার নামেই দলটির নামকরণ করা হয়েছে। এই চক্রে রুবেলের নেতৃত্বে ১২ জন সদস্য কাজ করেন। তাদের প্রধান টার্গেট সোনা ও মুঠোফোনের দোকান। তারা প্রথমে ক্রেতা সেজে কোন দোকানে চুরি করবেন, সেই টার্গেট ঠিক করেন। কয়েকদিন পর সেখানে গিয়ে সুযোগ বুঝে চুরি করে সটকে পড়েন।

তিনি জানান, গ্রেপ্তার নয়নের দায়িত্ব ছিল সোনার দোকানের তালা কাটা। বাকিরা ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করেন। ঘটনার দিন চুরি করা সোনা নিয়ে তারা বিভিন্ন কৌশলে পালিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে চক্রটির প্রধান রুবেলের নির্দেশে নাটোর জেলার মাদ্রাসা মোড়ে তারা একত্রিত হয়। পরে সেখান থেকে কুমিল্লা গিয়ে নিজেদের মধ্যে চুরির মালামাল ভাগ করে তারা। দলের প্রধান রুবেল ভাগে পান ১৭ ভরি সোনা। তিনি সেগুলো গ্রেপ্তার কুমিল্লার সোয়াগাজী বাজারে বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সের মালিক শাহজালালের কাছে বিক্রি করেন। গ্রেপ্তার এড়াতে তারা বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতেন।

কুমার চক্রবর্তী জানান, প্রথমে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় ইব্রাহিম নয়নকে চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চোর দলটির প্রধান আঙুল কাটা রুবেল ও সোনা ব্যবসায়ী শাজাহালকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা চুরির কথা স্বীকার করেন। আজ বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। একই সঙ্গে রিমান্ড আবেদন করা হবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে এ চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত, তা জানা যাবে। সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।