ডেস্ক রিপোর্ট:
অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক প্রযুক্তি দুনিয়ার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তবে তার কর্মজীবনের শুরুটা একেবারেই সাধারণ। মাত্র ১১ বছর বয়সে পত্রিকা বিলি করে তার কর্মজীবনের যাত্রা শুরু হয়।
সম্প্রতি টেবিল ম্যানার্স পডকাস্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টিম কুক বলেন, ‘শৈশব থেকেই আমি কঠোর পরিশ্রমের গুরুত্ব বুঝেছি। তখনকার সমাজে বিশ্বাস করা হতো, কাজের জন্য বয়স কোনো বাধা নয়।’
টিম কুকের জন্ম ১৯৬০ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামার মোবাইল শহরে। তবে তার পরিবার পরে রবার্টসডেলে গিয়ে বসবাস শুরু করে। ছোট এই শহরের সামাজিক পরিবেশ ছিল অত্যন্ত আন্তরিক। কুক স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘শহরটি ছিল এক পরিবারের মতো। সবাই সবাইকে চিনত এবং ভালোবাসায় আবৃত ছিল প্রতিটি বাড়ি।’
১১ বছর বয়সে সংবাদপত্র বিলির কাজ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন কুক। ১৪ বছর বয়সে তিনি স্থানীয় একটি ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁয় যোগ দেন। সেখানে বার্গার তৈরি করতেন এবং পরতে হতো ছোট টুপি ও অ্যাপ্রোন। ঘণ্টায় আয় হতো মাত্র ১ দশমিক ১০ ডলার, যা সে সময় ন্যূনতম মজুরির নিচে হলেও বৈধ ছিল।
পরে লি ড্রাগস্টোরে মায়ের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও অর্জন করেন। হাইস্কুলে তিনি ছিলেন ব্যান্ড দলের ট্রমবোন-বাদক এবং ইয়ারবুক দলের ব্যবসা ব্যবস্থাপক। স্থানীয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করতেন তিনি।
টিম কুক বলেন, ‘আমার বাবা-মা আমাকে কঠোর পরিশ্রমের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন। তাদের শেখানো মূল্যবোধ আজও আমার জীবনে অনুপ্রেরণা হয়ে আছে। তারা বলতেন, কাজ শুধু জীবিকা নয়, এটি জীবনের লক্ষ্যও হতে পারে।’
অবার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় কুক প্রথমবার পারসোনাল কম্পিউটার দেখেন। এরপর আইবিএমসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। ১৯৯৮ সালে স্টিভ জবস তাকে অ্যাপলে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। কুক বলেন, ‘স্টিভের সঙ্গে ১৩ বছর কাজ করেছি। তার মৃত্যু আমার জীবনের সবচেয়ে বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা। আমি ভাবতাম তিনি চিরকাল থাকবেন। কিন্তু বাস্তবতা আমাদের প্রত্যাশার মতো হয় না।’
বর্তমানে অ্যাপলের সিইও হিসেবে কাজ করছেন কুক। কঠোর পরিশ্রম ও শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী তিনি। ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে ওঠা তার বহুদিনের অভ্যাস। কুক বলেন, ‘দিনের প্রথম অংশটুকু আমি পুরোপুরি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ দিই। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্ব আর কাজ সময় কেড়ে নেয়।’