১৩ কোটি আমানতে ১৪ কোটি ঋণ: স্বদেশ লাইফের চেয়ারম্যানসহ পরিচালকদের অপসারণ

প্রকাশিত: ১০:২৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৪, ২০২৪

সেলিনা আক্তার  :

নতুন প্রজন্মের জীবন বিমা কোম্পানি স্বদেশ লাইফ ইনস্যুরেন্স পরিশোধিত মূলধনের বিপরীতে স্থায়ী আমানত রাখা ১৩ কোটি ৫ লাখ টাকার বিপরীতে এনআরবিসি ব্যাংক থেকে ১৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে।

এই অস্বাভাবিক ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে মনে করছে বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এজন্য স্বদেশ লাইফের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং আরও ১০ জন পরিচালককে অপসারণ করেছে বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) আইডিআরএ থেকে এই অপসারণ সংক্রান্ত চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।

অপসারণ হওয়া অন্যরা হলেন কোম্পানির চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শহিদুল আহসান এবং পরিচালক নুরুল আলম চৌধুরী, মো. বাহারুল আহসান, মো. মারজানুর রহমান, ফারাহ আহসান, এ বিএম আব্দুল মান্নান, শামসুর নাহার রহমান, মো. ফিরোজুল আহসান, মো. কামরুল আহসান, মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম এবং মদিনা তুন নাহার।

অপসারণ সংক্রান্ত নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, এসব পরিচালকরা স্বদেশ লাইফে পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদে আসীন থাকা অবস্থায় ওই কোম্পানি বিমা আইন-২০১০ এর ধারা ২১ মোতাবেক কোম্পানির পেইড আপ ক্যাপিটাটের বিপরীতে রাখা ১৩ দশমিক ০৫ কোটি টাকা স্থায়ী আমানতের বিপরীতে এনআরবিসি ব্যাংক থেকে ১৪ দশমিক ৩০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে।

বিমা আইন-২০১০ এর ২১ (২) ধারায় পেইড আপ ক্যাপিটাল কোনো তফসিলি ব্যাংকে দায়মুক্তভাবে রাখার বিধান রয়েছে। তাছাড়া ঋণ হিসেবে উত্তোলিত টাকা কোম্পানির সংশ্লিষ্ট সময়ের স্থিতিপত্রে প্রদর্শন করা হয়নি বিধায় ওই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, স্থায়ী আমানতের বিপরীতে ঋণ গ্রহণ করে বিমা আইন লঙ্ঘন ও আত্মসাৎ করার মাধ্যমে বিমা কোম্পানি ও পলিসি গ্রাহকের স্বার্থহানি করায় বিমা আইন-২০১০ এর ৫০ (১) ধারা অনুযায়ী কেন আপনাকে স্বদেশ লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করা হবে না, তার কারণ দর্শানোর জন্য গত ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে ডাকযোগে (রেজিস্ট্রিসহ) এবং ই-মেইলের মাধ্যমে গত ৪ ডিসেম্বর চিঠি দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও কারণ দর্শানোর কোনো জবাব দাখিল করেননি, অর্থাৎ আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ গ্রহণ করেননি।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিমা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালে এ ধরনের কার্যক্রম বিমা কোম্পানি ও পলিসি গ্রাহকদের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হওয়ায় বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বিমা আইন-২০১০ এর ৫০(১) ধারা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানসহ পরিচালকরদের পদ থেকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ আদেশ জারির তারিখ থেকে নির্দেশনা কার্যকর হবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।