১৭ দিন পর মুক্ত বাতাসে ভারতের সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকরা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
ডেস্ক রিপোর্ট:
ভারতের উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে নির্মাণাধীন সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করে আনা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাত আটটা ২৭ মিনিটের দিকে প্রথম শ্রমিককে বের করে আনা হয়। ৯টা পর্যন্ত ৩৩ শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। একে একে সব শ্রমিককে সুড়ঙ্গ থেকে বের করে আনা হচ্ছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে।
কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এনডিটিভির খবরে বলা হচ্ছে, উদ্ধারকৃত শ্রমিকদের সেবায় সেখানে একটি অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এখানেই শ্রমিকদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। সুড়ঙ্গের মুখে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪১টি অ্যাম্বুলেন্স।
খবরে বলা হয়েছে, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-এর তিনটি দল সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে শ্রমিকদের বের করে আনার কাজ করছে। উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ভালো রয়েছে।
উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, প্রত্যেক শ্রমিককে বের হয়ে আসতে পাঁচ থেকে সাত মিনিট সময় লাগছে। উদ্ধার করা প্রথম তিন শ্রমিককে বিশেষভাবে পরিবর্তিত স্ট্রেচারে বের করে আনা হয়েছে। এগুলোকে ম্যানুয়ালি পাহাড়ে ছিদ্র করা একটি দুই মিটার চওড়া গর্ত দিয়ে পাইপের মাধ্যমে নিচে নামানো হয়েছিল।
এনডিআরএফ কর্মীরা প্রথমে পাইপ দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখানে তারা পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি আটকে পড়াদের দিকনির্দেশনা দেন উদ্ধার প্রক্রিয়া সম্পর্কে। প্রতিটি শ্রমিককে স্ট্রেচারে বেঁধে ৬০ মিটার গভীর থেকে উপরে তুলে আনা হচ্ছে।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি চিনুক হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উদ্ধারকৃত কোনও শ্রমিকের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন হলে তাদের এয়ারলিফট করে বড় হাসপাতালে নিয়ে যেতে এই হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হতে পারে।
গত ১২ নভেম্বর ভোরে নির্মাণাধীন ওই সুড়ঙ্গটির একটি অংশ ধসে পড়ে। এ সময় এর ভেতরে ৪১ শ্রমিক আটকা পড়েন। গত ১৭ দিন ধরে সেখানে আটকে রয়েছেন তারা। আটকে পড়ার প্রথম দিন থেকেই তাদের উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে উত্তরাখণ্ডের মূখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি জানিয়েছিলেন, শ্রমিকদের উদ্ধারে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে পাইপলাইন স্থাপনের যে কাজ চলছিল তা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আর কয়েক ঘণ্টা পরই দুই ফুট ব্যাসার্ধের এই পাইপের মধ্যে দিয়ে সুড়ঙ্গ থেকে একে একে সব শ্রমিকদের বের করে আনা হবে। ম্যানুয়াল মাইনিং বা হস্তচালিত খনন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাইপটি প্রায় গন্তব্যের কাছে পৌঁছে গেছে।
এত দিন ধরে সুড়ঙ্গের শ্রমিকদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। পাইপের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে কথা চলছিল। পৌঁছে দেওয়া হয় খাবার, পানীয় এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
সুড়ঙ্গে থাকাকালীন মঙ্গলবার শ্রমিকদের প্রথম ভিডিও প্রকাশ করা হয়। পাইপের মাধ্যমে এই ক্যামেরা পাঠানো হয়েছিল। এতে দেখা গেছে, সুড়ঙ্গের ভেতরে কী অবস্থায় রয়েছেন শ্রমিকরা।