২০১৪ সালে বিএনপিবিহীন নির্বাচন নিয়ে সরকার কোনও চাপে ছিল না, বর্তমানেও নেই: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৬:৫৭ অপরাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

২০১৪ সালে বিএনপিবিহীন নির্বাচনের পর একটি দেশ ৬ মাসের মধ্যে আবারও নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছিল। তখন এটিকে উচ্চাভিলাষী হিসেবে অভিহিত করেছিল সরকার। ওই সময়েও সরকার চাপে ছিল না এবং বর্তমানেও নেই বলেছেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

আজ রবিবার (২৫ জুন) ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’-এ তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘২০১৪ সালে আমি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তার তিন দিন পর একটি ডিপ্লোমেটিক ব্রিফিংয়ের আয়োজন করি। ওই ব্রিফিংয়ে (বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা) সাধারণভাবে নেতিবাচক কিছু বলেননি। কিন্তু একজন তাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেছিলেন—তারা বর্ষার আগে নতুন একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চান। আমি এই প্রশ্নের জন্য তৈরি ছিলাম এবং এ জন্য আমার কোনও নোটও প্রস্তুত ছিল না। তারপরেও আমি সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিয়েছিলাম যে এটি একটি অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী বিষয়।’
২০১৪ থেকে শুরু করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ওই সরকারের সময়ে সবচেয়ে বেশি আইন প্রণয়ন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে ক্যাবিনেটে এবং সেটি অত্যন্ত গতিশীল একটি সরকার ছিল বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে যদি আমরা চাপ অনুভব না করি, বর্তমান সময়ে কোনও কিছুতে আমরা চাপ অনুভব করবো না। আমরা সংবিধান অনুযায়ী, সরকারের ম্যান্ডেট যতদিন আছে, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে যাবে। কাজ করে যাবে দ্ব্যর্থহীনভাবে। যে সময়ে নির্বাচন কমিশন তাদের তফসিল ঘোষণা করবে, যেদিন থেকে বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশনের আওতাভুক্ত হয়ে যাবে, সেদিন সরকার নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এখানে থমকে যাওয়া, ফিরে দেখা বা সন্দেহের বশবর্তী হয়ে ভীতি তো অনেক দূরের কথা, আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধুকন্যার ডিকশনারিতে ভীতি শব্দটি নেই।’
নির্বাচন

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এমনকি বন্ধুরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ পছন্দ করবে না সরকার। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর কোনও বন্ধুরাষ্ট্রকে বলিনি এবং এটি আমরা চাইও না যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনও ধরনের বক্তব্য কেউ করুক। যারা এটি করে, তাদের আমরা অতীতেও বলেছি আমাদের অবস্থানের কথা। তারপরও অনেকে এটি করে যান এবং এটি দুঃখজনক। আমরা এটি পছন্দ করি না এবং কখনও করবো না।’

নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে মন্তব্য বা নাক গলানো আমরা চাই না বলে তিনি জানান।

বিদেশিদের অবস্থান

বাংলাদেশ নিয়ে অতীতে অবশ্যই ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রশ্ন এলে আওয়ামী লীগ সরকারকে, নেতৃত্বকে বা প্রধানমন্ত্রীকে—আমরা সঠিকভাবে বাংলাদেশের স্বার্থ দেখছি না, বা অনেক ছাড় দিচ্ছি। এ ধরনের নানান দোষে সাব্যস্ত করা হয় বা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় বিষয়, যা আমাদের বিপক্ষে কাজ করেছে, সেটি হচ্ছে, আমরা ভারতকে গ্যাস দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছি মার্কিন চাপের মুখে। কই তখন তো কেউ বলেন না শেখ হাসিনা কেন ভারতকে গ্যাস দিলো না।’

প্রতিমন্ত্রী জানান, একটি দেশ ছাড়া অন্য কোনও দেশ নিষেধাজ্ঞা বা ভিসানীতি দেয়নি। একটি দায়িত্বশীল দেশ হিসেবে ওই রাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখবো।

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি এখানেও আপনারা উন্নতি দেখবেন। আমরা যোগাযোগ রাখছি এবং আমরা কাজ করছি।’

‘র‌্যাব প্রশ্নে পরিষ্কারভাবে ওই দেশের প্রতিনিধিরা বলেছেন যে গত দুই বছরে বেশ উন্নতি হয়েছে। তাই যদি হয় তাহলে এর ফলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়া উচিত। আমরা এটি আদায় করে ছাড়বো।’ আমরা উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখাতে পেরেছি বলে শাহরিয়ার আলম জানান।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নতির পরেও যদি এটি প্রত্যাহার না হয়, তাহলে একদিন আমাদের বুঝতে হবে—এর পেছনে নিশ্চয়ই অন্য কোনও কারণ আছে।’