২০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি ৩০৫ জন, সিঁড়িতেও চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে

প্রকাশিত: ১১:১১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

পানির অপর নাম যেন মরণে পরিণত হয়েছে নোয়াখালীতে। চারদিকে বন্যার অথৈ পানি। সেখানে বিশুদ্ধ পানির অভাবে বাধ্য হয়ে পান করতে হচ্ছে বন্যার পানি। ফলে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। রোগীর চাপে ঠাঁই মিলছে না হাসপাতালে। কেউ বারান্দায় আবার কেউ মেঝেতে, কাউকে সেবা নিতে হচ্ছে সিঁড়িতে বসে।
২০ শয্যার ডায়রিয়া ইউনিটে ভর্তি রয়েছে ৩০৫ জন। নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ৮৭৫ জন।

জানা যায়, নোয়াখালীতে বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র ও বাড়িঘরে মানুষদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এসব রোগ। হঠাৎ করে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকট তৈরি হয়েছে। এতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ওষুধসহ নার্স ও চিকিৎসক সংকটও রয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত ডায়রিয়ায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে এবং সহস্রাধিক আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে।

সুবর্ণচর থেকে আসা বিবি ফাতেমা বলেন, হাসপাতালে খুব ভিড়। ঠিকমতো সেবা পাই না। একজন গেলে ১০ জন ভর্তি হয়।
জেলা আলাদিনগর এলাকা থেকে সেবা নিতে আসা রহিমা বেগম বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় রোগীদের ঠাঁই হয়েছে বারান্দায়, এমনকি সিঁড়িতেও আছেন কেউ কেউ। শয্যার সংকটের কারণে ওয়ার্ডগুলোতে পা ফেলার জায়গা নেই। তবে আক্রান্ত বেশিরভাগই শিশু।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন  বলেন, ২৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে ভর্তি ৮৭৫ জন। ডায়রিয়া ইউনিটে ৩০৫ জন। হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ অনেক বেশি। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বেশিরভাগই শিশু। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতালের নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলায় জরুরি ভিত্তিতে একটি ডায়রিয়া ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। সেখানেও জায়গা সংকুলান না হওয়ায় মেঝেতে রোগী রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সের সংকট রয়েছে। এরপরও সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, ডায়রিয়া রোগী ও চর্ম রোগীর সংখ্যাও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ডায়রিয়ার প্রকোপ যাতে মহামারি আকারে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য আমরা বন্যাকবলিত এলাকায় ২ লাখ ৬০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন সরবরাহ করছি। চর্মরোগের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। জেলার বন্যাকবলিত এলাকায় স্বাস্থ্য সেবায় ১২৪টি সরকারি ও ১৬টি বেসরকারি মেডিকেল টিম কাজ করছে।