২৮ অক্টোবরের সহিংসতায় ঢাকায় ৩৪ মামলা: ফখরুল-আব্বাসসহ বিএনপির ৬৫২০ নেতাকর্মী আসামি

প্রকাশিত: ৬:০৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩০, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকায় নাশকতা, ভাঙচুর, হামলা, অগ্নিসংযোগ, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ নানা অভিযোগে ৩৪টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় ৩০টি ও ঢাকা জেলার ৪ থানায় পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।


এসব মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসসহ ১ হাজার ৫২০ জন। এছাড়া অজ্ঞানপরিচয় আরও ৫ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) আদালত সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এর আগে মহাসমাবেশের দিন (শনিবার) ও রোববার এসব মামলা দায়ের করা হয়।


আদালত সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় কনস্টেবল হত্যাসহ পৃথক ৩ মামলায় ৪৬৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ কনস্টেবল হত্যা মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রধান আসামি। এ মামলায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ আরও ১৬৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। রমনা মডেল থানায় পৃথক ৩টি মামলায় ১৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় মির্জা আব্বাসকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৭২ জনকে আসামি করা হয়েছে ওই মামলায়।

প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার আরেক মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ ৫৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আহমেদ খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, সামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।
শাহজাহানপুর থানায় মামলা হয়েছে ৪টি।

এসব মামলায় ৪৩ জন এজাহারহারনামীয় এবং অজ্ঞাতপরিচয় এক হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। শাহআলী থানায় ১৮ জন, কাফরুল থানায় ৪১ জন, যাত্রাবাড়ী থানায় ১৫ জন, ডেমরা থানায় ১৭ জন, উত্তরা পূর্ব থানায় ৩৪ জন, ওয়ারী থানায় ৩৮ জন, ভাষানটেক থানায় ১৮ জন, দারুস সালাম থানায় ২৬ জন, ভাটারা থানায় ৩১ জন, মতিঝিল থানায় ৬১ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া খিলগাঁও থানায় ৬১ জন ও অজ্ঞাতপরিচয় ১৫০ জন, মুগদা থানায় ২৪ জন ও অজ্ঞাতপরিচয় ৪০০ জন, রামপুরা থানায় ২৪২ জন ও অজ্ঞাতপরিচয় এক হাজার ৫০০ জন, হাতিরঝিল থানায় ১৩ জন ও অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ জন, পল্লবী থানায় ৫৮ জন ও অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০ জন, বাড্ডা থানায় ৪১ জন ও অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ জন, শাহবাগ থানায় ৯ জন ও অজ্ঞাতপরিচয় ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।


ঢাকা জেলার সাভার থানায় নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনে এজাহারনামীয় ১৮ জন ও অজ্ঞাতপরিচয় ১৩০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। ধামরাই থানায় করা মামলায় ৪৩ জন এজাহারনামীয় আসামি। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি ১৫০ জন। মহাসমাবেশের পর অটোরিকশা পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় কাউছার আহমেদ নামে একজন বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এছাড়া সমাবেশের পর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সুমন আহমেদ নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।


প্রসঙ্গত, শনিবার (২৮ অক্টোবর) নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ কর্মসূচি ছিল। তবে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য, একজন যুবদল কর্মী এবং একজন সাংবাদিক নিহত হন। পুলিশ, সাংবাদিক ও বিএনপি নেতাকর্মীসহ আহত হন সহস্রাধিক।