মোঃ সাইফুল ইসলাম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯ এমপির মধ্যে পেশায় আইনজীবী হলেন ৩২ জন। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দাখিল করা হলফনামা থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।এর মধ্যে আওয়ামী লীগ থকে ২৬, জাতীয় পার্টি থেকে ২ এবং স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ৪ জন আইনজীবী।
হলফনামায় পেশা হিসেবে ওকালতি উল্লেখ করেছেন ২৯ জন। তবে পেশা হিসেবে আইনজীবী উল্লেখ না করলেও আরও কয়েকজন আইনজীবী এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত আইনজীবী এমপিদের মধ্যে থেকে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ছাড়াও পাঁচজন পূর্ণমন্ত্রী হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এমপি পদে নির্বাচিতরা হলেন- পঞ্চগড়-২ (বোদা ও দেবীগঞ্জ) মো. নুরুল ইসলাম সুজন, দিনাজপুর-৫ (পার্বতীপুর ও ফুলবাড়ি) মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, লালমনিরহাট-৩ (লালমনিরহাট সদর) মো. মতিয়ার রহমান, রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) শিরীন শারমিন চৌধুরী, কুড়িগ্রাম-৪ (রৌমারী, চর রাজিবপুর ও চিলমারী) মো. বিপ্লব হাসান, গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর ও পলাশবাড়ী) উম্মে কুলসুম স্মৃতি, নওগাঁ-৫ (নওগাঁ সদর) নিজাম উদ্দিন জলিল (জন), নাটোর-৩ (সিংড়া) জুনায়েদ আহমেদ পলক, পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) মো. শামসুল হক টুকু, মাগুরা-২ (মহাম্মদপুর, শালিখা ও মাগুরা সদর) শ্রী বীরেন শিকদার, ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর ও কাঠালিয়া) মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর, ঝালকাঠি-২ (ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি) আমির হোসেন আমু, পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও ইন্দুরকানি) শ ম রেজাউল করিম, ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) নিলুফার আনজুম পপি, ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ উপজেলার একাংশ, ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৫৫, ৫৬, ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং সাভার উপজেলার একাংশ) মো. কামরুল ইসলাম, ঢাকা-১৩ (ঢাকা উত্তর সিটির ওয়ার্ড- ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৪) জাহাঙ্গীর কবির নানক, নরসিংদী-৪ (মনোহরদী ও বেলাব) নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, সুনামগঞ্জ-১ (ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ) রনজিত চন্দ্র সরকার, হবিগঞ্জ-২ (আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং) ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল, হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর, লাখাই ও সায়েস্তাগঞ্জ) মো. আবু জাহির, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আনিসুল হক, কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) মুজিবুল হক, চাঁদপুর-১ (কচুয়া) মো. সেলিম মাহমুদ, চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর ও হাইমচর) দীপু মনি, লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও লক্ষীপুর সদর উপজেলার একাংশ) নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, চট্টগ্রাম-৯ (চট্টগ্রাম সিটির ওয়ার্ড ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫) মহিবুল হাসান চৌধুরী।
জাতীয় পার্টি থেকে দুজন আইনজীবী এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন- কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) মো. মজিবুল হক, চট্টগ্রাম-৫ (চট্টগ্রাম সিটির ওয়ার্ড ১ ও ২) আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৪ জন আইনজীবী এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন- নওগাঁ-৬ (আত্রাই ও রানীনগর) মো. ওমর ফারুক, নাটোর-১ (লালপুর ও বাগাতিপাড়া) মো. আবুল কালাম, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) মো. সোহরাব উদ্দিন, হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) তথ্য অনুযায়ী, চলতি সংসদে ২৯৯ জন এমপির মধ্যে বেশির ভাগের পেশাই (৬৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ বা ২০০ জন) ব্যবসা। আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে এই হার শতকরা ৬৫ দশমিক ৯২ শতাংশ (১৪৭ জন), জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার শতকরা ৮১ দশমিক ৮২ শতাংশ (৯ জন), অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ (২ জন) এবং স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার ৬৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ (৪২ জন)। নবনির্বাচিত ২৯৯ এমপির মধ্যে ২৯ জন (৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ) আইনজীবী (প্রকৃত তথ্য হবে ৩২ জন এবং ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ)। এই ৩২ জনের মধ্যে ২৬ জনই আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত।
সুজনের তথ্য মতে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ীর হার ছিল শতকরা ৫৮ দশমিক ৭১ শতাংশ (১১৪২ জন); নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার দাঁড়িয়েছে ৬৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ (২০০ জন)। প্রতিদ্বন্দ্বিতার তুলনায় ব্যবসায়ীদের নির্বাচিত হওয়ার হার ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ বেড়েছে। নবনির্বাচিত এমপির মধ্যে ২৬৯ জনের (৮৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ) সম্পদ কোটি টাকার ওপরে। আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমপিদের মধ্যে এই হার শতকরা ৯৫ দশমিক ০৬ শতাংশ (২১২ জন), জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার ৯০ দশমিক ৯১ শতাংশ (১০ জন), অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১০০ শতাংশ (৩ জন) এবং স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিতদের মধ্যে এই হার ৭০ দশমিক ৯৬ শতাংশ (৪৪ জন)। নবনির্বাচিত এমপির মধ্যে ২৫ লাখ টাকার কম সম্পদের মালিক রয়েছেন ৯ জন।