নিজস্ব প্রতিবেদক:
সালাহউদ্দিন বলেন, দেশের বিভিন্ন শ্রেণি— পেশার মানুষের পক্ষ থেকে যেখানে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার জোর দাবি জানানো হচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে ৪৩তম বিসিএসের ঢালাও নিয়োগদানের মাধ্যমে সেই সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্যদের সরকারি প্রশাসনের উচ্চতর পদসমূহে পুনর্বাসন করার এই অন্তর্ঘাতমূলক সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার পরিপন্থি এবং কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সালাহউদ্দিন দাবি করেন, স্বাধীনতার অব্যবহিত পর ১৯৭৩ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় বিনা পরীক্ষায় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী নিজ দলীয় ক্যাডার বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যকে সিভিল সার্ভিসে নিয়োগ প্রদান করে। এরাই ১৯৯৬ সালে প্রশাসনের ইন—সার্ভিস কর্মকর্তাদের চাকরির শৃঙ্খলা এবং সমস্ত নিয়মনীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রথমবারের মত তথকথিত ‘জনতার মঞ্চের’ আড়ালে আওয়ামী লীগের বিধ্বংসী রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে দেশকে ভয়াবহ নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিয়েছিলো।
আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে পুনরায় ক্ষমতায় এসেই প্রশাসনিক সমস্ত নিয়মনীতি শৃঙ্খলা ও মূল্যবোধকে ভেঙে দিয়ে দেশের প্রশাসন ব্যবস্থাকে পুরোপুরি নিজেদের আজ্ঞাবহ দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিলো।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের হাজার হাজার যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীদের বঞ্চিত করে দলীয় ভিত্তিতে বিবেচিত ও সুপারিশকৃত ৪৩তম বিসিএস বাতিল করার জন্য আমরা দেশ ও জাতির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা জানতে পেরেছি হাসিনা সরকারের সময় ইতোমধ্যে আবেদনকৃত ৪৪তম বিসিএসের যে ৯০০০ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়েছিলো— তার মধ্যে ৩০০০ জনের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ৪৫তম বিসিএসের লিখিত উত্তরপত্রের মূল্যায়ন প্রায় শেষ পর্যায়ে। অপর দিকে ৪৬ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে তিন মাস পূর্বে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দাবি করছি রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে প্রবেশে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী গোষ্ঠীর এবং সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনীকে নিবৃত্ত করার লক্ষ্যে এই তিনটি বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়াসমূহ পুরোপুরি বাতিল করা হোক। জুলাই—আগস্ট বিপ্লবে দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তুলতে হলে ফ্যাসিবাদের দোসরদের যে কোন মূল্যে রুখে দিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে এ বিষয়ে আপস করার বিন্দুমাত্র কোন সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, অতীতে একই প্রেক্ষাপটে ২৭তম বিসিএস এর চূড়ান্ত ফলাফল বাতিল করা এবং পুনরায় মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করার নজির রয়েছে।