ক্রীড়া ডেস্ক :
উড়ন্ত শুরুর পরও কীভাবে ধসে পড়তে হয় তার নমুনা দেখিয়েছে নেদারল্যান্ডস। প্রথম পাওয়ার-প্লেতে ৬৬ রান তোলা দলটি এরপর একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়েছে রানআউটে কাঁটা পড়ে। পুরো ইনিংসে ডাচদের চার ব্যাটার রানআউট হয়েছেন। সতীর্থদের যাওয়া-আসার মিছিলে কেবল ফিফটি পেয়েছেন সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখ্ট। যার ওপর ভর করে আফগানিস্তানকে ১৮০ রানের লক্ষ্য দিয়েছে স্কট এডওয়ার্ডসের দল।
লখনৌর ইকানা স্টেডিয়ামে আজ (শুক্রবার) বিশ্বকাপের ৩৪তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে নেদারল্যান্ডস-আফগানিস্তান। টস জিতে আগে ব্যাট নেওয়া ডাচরা মাত্র ৩ রানেই প্রথম উইকেট হারিয়ে বসে। এরপর ৭০ রানের জুটি পেলেও তারা মাঝপথে খেই হারায়। তাদের টপ অর্ডারের টানা চার ব্যাটারই ফিরেছেন রানআউটে। ফলে ডাচরা আর বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি। এঙ্গেলব্রেখ্ট সর্বোচ্চ ৫৮ এবং ম্যাক্স ও’ডাউড ৪২ রান করেন। আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ নবি।
সেমিফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে আফগানদের জন্য ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে ৬ ম্যাচের তিনটিতে জিতেছে হাশমতউল্লাহ শহিদীর দল। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে দুটি দল সেমিতে ওঠার সুযোগ রয়েছে। এই ম্যাচ জিতলে অনেকটাই এগিয়ে যাবে রশিদ-মুজিবরা। অন্যদিকে বিশ্বকাপের বড় অঘটনের জন্ম দেওয়া ডাচরাও দুই ম্যাচ জিতেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার পর তারা হারিয়েছে বাংলাদেশকেও। যার মাধ্যমে নেদারল্যান্ডস চলতি বিশ্বকাপকে অবিস্মরণীয় করে তুলেছে।
আজ আগে ব্যাট করতে নামা ডাচদের প্রথমেই আমন্ত্রণ জানান স্পিনার মুজিব-উর-রহমান। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই তিনি ওপেনার ওয়েসলি বারেসির উইকেট তুলে নেন। এর মাধ্যমে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শততম উইকেট তুলে নেন মুজিব। এটি তার ৭২তম ওয়ানডে ম্যাচ। সাম্প্রতিক সময়ে মুজিব নতুন বলে নিজেকে বেশ কার্যকরী প্রমাণ করেছেন। আউটসুইং হওয়া বলে ২২ বছর বয়সী এই অফব্রেক স্পিনার বারেসিকে ফেলেছেন লেগ বিফোরের ফাঁদে। বিক্রমজিৎ সিংয়ের বদলে ওপেন করতে নেমেই ব্যর্থ হলেন বারেসি। তিনি ফেরেন মাত্র ১ রানে।
দলীয় ৩ রানেই প্রথম উইকেট হারানোর পরও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ইউরোপের দেশটি। ম্যাক্স ও’ডাউড ও কলিন অ্যাকারম্যান মিলে গড়েন ৭০ রানের জুটি। ফিফটির পথে ছিলেন ম্যাক্স। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ২ রান নিতে গিয়ে ডিরেক্ট হিটে তার স্টাম্প ভাঙেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। এর আগে ম্যাক্স ৪০ বলে ৯টি চারের বাউন্ডারিতে ৪২ রান করেন। ফলে ডাচদের সংগ্রহ নেওয়ার পথে ছেদ পড়ে। এরপর তারা আর বড় কোনো জুটি বাধতে পারেনি।
অভিজ্ঞ ব্যাটার কলিন অ্যাকারম্যানও ক্রিজে প্রায় থিতু হচ্ছিলেন। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেনি (২৯ রান)। মিড অফে ফিল্ডারের হাতে বল দিয়ে তিনি দৌড় দেন। এরপর রশিদ ও উইকেটকিপার ইকরাম আলিখিল মিলে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান অ্যাকারম্যানকে। ৭৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো দলটি এরপর একশ পূর্ণ করার আগে পাঁচ ব্যাটারকে হারিয়ে বসে। মাঝে ব্যাটিংয়ের মূলস্তম্ভ ডাচ অধিনায়ক এডওয়ার্ডসও রানের খাতা খোলার আগে রানআউট। অপরপ্রান্তে তখনও লড়ছিলেন এঙ্গেলব্রেখ্ট।
শেষ পর্যন্ত ৮৬ বলে ৬টি চারের বাউন্ডারিতে ৫৮ করে তিনি রানআউট। এছাড়া তাদের আর কোনো ব্যাটারই উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেনি। ফলে ৪৬.৩ ওভারেই ১৭৯ রানে থামে ডাচদের ইনিংস। আফগানদের হয়ে ২৮ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন নবি। এছাড়া নুর আহমদ ৩১ রানে দুটি এবং মুজিব এক উইকেট নেন। ৩১ রানে উইকেটশূন্য ছিলেন রশিদ খান।