৫ টনের বেশি ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, চলে ৩৫ টন
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু থেকে ৫ টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচল করতে নিষেধ করা হলেও, প্রতিদিন সেতুগুলোর ওপর দিয়ে পার হচ্ছে ২২- ৩০ টন ওজনের মালবাহী ট্রাক। লেবুখালী পায়রা সেতুতে ডিজিটাল ওয়েট স্কেল স্থাপনের কারণে, ওভারলোড নেওয়া প্রতিটি পরিবহনকে গুনতে হয় মোটা অংকের জরিমানা। আর জরিমানা এড়াতে অতিরিক্ত ওজন নেওয়া ট্রাকগুলো এই চোরাই পথ বেছে নিয়েছে।
২নং ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা মো. ইদ্রিস হাওলাদার(৬৩) বলেন, লেবুখালী ব্রিজের জরিমানা এড়াতে অনেক মালবোঝাই গাড়ি এখান দিয়ে যায়। ওদের জন্য আমাদের রাস্তাটা নষ্ট হয়ে গেছে। সেতুগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
একই এলাকার বাসিন্দা মো. আল-মামুন (৪৬) বলেন, সওজ থেকে ৫ টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ করলেও এখান থেকে ৩০-৩৫ টনের ট্রাক চলে। কবে যেন আমতলীর মতো এখানেও দুর্ঘটনা ঘটে।
মালবাহী একটি ট্রাকের চালক মো. মুসা বলেন, আমার ট্রাকটি ২২ টন পর্যন্ত নিতে পারে। এখন ২২ টনের একটু বেশি ওজন আছে। আমি মহিপুর থেকে শুটকি নিয়া চট্টগ্রামে যাচ্ছি। পার্টি বলে দিছে আমি যাতে বেবুখালী সেতু না পার হইয়া, এদিক দিয়ে যাই। তাই এদিক দিয়ে যাচ্ছি। সাইনবোর্ডগুলো খুবই ছোট তাই দেখা যায় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জামিল আক্তার লিমন বলেন, পটুয়াখালী থেকে পায়রাকুঞ্জ পর্যন্ত মোট ৩টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু আছে। এর মধ্যে একটি পায়রা নদীতে মূল সেতুর সঙ্গে নির্মাণ হবে। বাকি যে দুটি রয়েছে সেটার টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান। আমরা দ্রুতই কাজ শুরু করতে পারব। মির্জাগঞ্জের অংশে যে দুটি আছে আমরা তার প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। প্রস্তাব অনুমোদন হলে আমরা তখন নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে পারব।
জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মুহাম্মদ আরেফিন বলেন, সেতুগুলো আসলেই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আসলে এতো হেবি লোডের ট্রাক এখান থেকে চলার কথা না। আমি শীঘ্রই সড়ক বিভাগ, পুলিশ সুপার ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা বলব। যাতে এই সড়কে কোনো হেবি লোডের ট্রাক অন্তত ব্রিজগুলো পুনরায় নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত যাতায়াত করতে না পারে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২২ জুন পার্শ্ববর্তী জেলা বরগুনার আমতলীতে সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ে কনেপক্ষের ৯ জন নিহত হন। এই ঘটনা পরই এসব ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।পটুয়াখালীতে একাধিক ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়েই চলছে ভারী যানবাহন। সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে সেতুগুলোতে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত চলছে ভারী যানবাহন। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকেই যায়।
জানা গেছে, সাইনবোর্ডে ৫ টনের অধিক ভারি যানবাহন চলতে নিষেধ করা হলেও এসব সেতু দিয়ে পার হয় ২২-৩৫ টন ওজনের মালবাহী ট্রাক। এর ফলে দুর্ঘটনার পাশাপাশি প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে সূত্রে জানা যায়, চৌরাস্তা থেকে সুবিদখালী পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়কটি জেলা শহরের সঙ্গে মির্জাগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র প্রধান সড়ক। ৩৫-৩৬ বছর আগে সড়কটির বিভিন্ন অংশে ৫টি বেইলি সেতু নির্মাণ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। যা বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে, সেতুগুলো চলাচলে সর্তক করে সাইনবোর্ড টানিয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ)। সাইনবোর্ডে উল্লেখ করা হয়েছে, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি। তাতে লেখা রয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু, ০৫ (পাঁচ) টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ। আদেশক্রমে নির্বাহী প্রকৌশলী, (সওজ) সড়ক বিভাগ, পটুয়াখালী।