’৭০-এর নির্বাচন: পাকিস্তান টেকা না টেকার গণভোট

প্রকাশিত: ২:৫৮ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০২০

বঙ্গবন্ধুর জন্য ’৭০-এর নির্বাচন ছিল অগ্নিপরীক্ষা। এলএফওর আওতায় নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগের ভেতরেই আপত্তি ছিল, আর ঘূর্ণিঝড়কে কারণ দেখিয়ে নির্বাচন বর্জন করেন ভাসানী। কিন্তু অটল থাকেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর এই সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করে দেয় বাঙালির ভবিষ্যৎ

 

 

একটি বাঁকবদলের নির্বাচন এবং একজন নেতার নেতৃত্ব—দুটিই বাঙালি জীবনে ক্রান্তিকাল নির্দেশক ছিল। নির্বাচনটি পাকিস্তানে ১৯৭০-এর এবং এই নির্বাচনে বাঙালিভাগ্যের ভবিষ্যৎ নির্দেশিত হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। ছয় দফা ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমান হন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু। তবে ’৭০-এর নির্বাচনে বাঙালির বিজয় নিশ্চিত করে বঙ্গবন্ধু তাঁর নেতৃত্বের ভিত শক্ত করলেন। প্রমাণ করলেন, তিনিই শোষিত-নির্যাতিত বাঙালির মুখপাত্র, তিনিই বাঙালির কণ্ঠস্বর। সুতরাং ’৭০-এর নির্বাচন বঙ্গবন্ধু ও বাঙালির জীবনে বাঁকবদলের ইঙ্গিতবহ।

 

’৭০-এর নির্বাচন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে তিন দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল—এক, বাঙালি পাকিস্তানি শাসনের নামে বৈষম্য ও শোষণের অবসান চেয়েছিল। সুতরাং নির্বাচনটি ছিল পাকিস্তান-বাঙালি আন্ত সম্পর্কের ক্ষেত্রে মোড় পরিবর্তনের ইঙ্গিতবাহী। দুই, জনমতভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে সামরিক শাসনের ডায়ালেকটিকস এক ধরনের সিনথেসিস তৈরি করেছিল নির্বাচনের রায়ের মাধ্যমে। তিন, কিন্তু বিজয়ী জনমতভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে সামরিক জান্তার দ্বন্দ্বের ডায়ালেকটিকসের সিনথেসিস হলো বাঙালির স্বাধীনতার মাধ্যমে এবং যার অনুঘটক ছিলেন বঙ্গবন্ধু স্বয়ং।

 

 

নির্বাচনের পটভূমি

 

১৯৬৯-এর ২৮ নভেম্বর পাকিস্তানের সামরিক জান্তাপ্রধান ইয়াহিয়া খান ঘোষণা করলেন যে ১৯৭০-এ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে; আর ১ জানুয়ারি থেকে রাজনৈতিক তৎপরতার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলো প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে পারবে। ’৭০-এর জানুয়ারি থেকেই আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল প্রচারাভিযান শুরু করে। ১৮ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামী পল্টনে জনসভা করে। সভামঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হয়, ‘বাঙালিরা হিন্দুর গোলাম।’ তাৎক্ষণিক উত্তেজনা, প্রতিক্রিয়া ও সংঘর্ষে তিনজন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়; পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী আহত হয় পাঁচ শতাধিক। ঘটনাটি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে ও নির্বাচনের পরিবেশে উত্তাপ ছড়ায়। অবশ্য এমন ঘোষণার মধ্য দিয়ে জামায়াত তার আসল চেহারা প্রকাশ করে, যার রুদ্রমূর্তি প্রত্যক্ষ করা গিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে।

 

অবশ্য জামায়াতি অপকর্ম সত্ত্বেও নির্বাচনী আবহাওয়া বেশ অনুকূল ছিল। কিন্তু আবহাওয়া প্রতিকূল হতে শুরু করে ৩০ মার্চ থেকে। সেদিন ইয়াহিয়া ঘোষণা করেন আইনি কাঠামো আদেশ বা লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার (এলএফও)। আওয়ামী লীগ, ভাসানী ন্যাপ ও ওয়ালী ন্যাপ একসঙ্গে প্রতিবাদ করে। পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রসংগঠনগুলোও বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এলএফওতে কী ছিল? ঘোষণাটির উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে পাকিস্তানের সংবিধানে ছয় দফা অন্তর্ভুক্ত করার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সব সময়ই বলেছিল যে ছয় দফার আলোকে পাকিস্তানের সংবিধান ও রাষ্ট্রকাঠামো নতুন করে ঢেলে সাজানো হবে। কিন্তু এলএফওর ২৫ ও ২৭ ধারা এমন নির্ধারিত লক্ষ্যের পথে বাগড়া দেয়। নির্বাচনমুখী দল আওয়ামী লীগের ভেতর বিতর্ক শুরু হয় নির্বাচনের পক্ষে-বিপক্ষে। এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু তাঁর সহকর্মীদের একান্তে বলেছিলেন, ‘আমার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। নির্বাচন শেষ হওয়া মাত্রই এলএফও টুকরা টুকরা করে ছিঁড়ে ফেলব।’ সামরিক গোয়েন্দারা বঙ্গবন্ধুর কথাগুলো টেপ করে ইয়াহিয়াকে শোনালে তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘আই উইল ফিক্স শেখ মুজিব ইফ হি বিট্রেজ মি।’ শেখ মুজিব প্রকারান্তরে ইয়াহিয়াকে ‘বিট্রে’ করে বাঙালির স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন; কিন্তু ইয়াহিয়া তাঁকে ‘ফিক্স’ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

 

২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু রেডিও-টেলিভিশনে নির্বাচনী ভাষণ দেন। ছয় দফা ও এগারো দফাভিত্তিক ছিল তাঁর ভাষণ। ৫ নভেম্বর মওলানা ভাসানী ভাষণ দেন। কিন্তু তত দিনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে তাঁর দলের ভেতর দোদুল্যমানতা প্রকাশ পেয়েছিল। প্রসঙ্গক্রমে এই নির্বাচনের তাৎপর্য নিয়ে মুসলিম লীগের খাজা খায়েরুদ্দীনের একটি দিকনির্দেশক মন্তব্য উদ্ধৃতি করা যেতে পারে। তিনি ঢাকার একটি আসনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। একটি জনসভায় তিনি বলেছিলেন, ‘এই নির্বাচন হলো পাকিস্তান টিকবে কি টিকবে না তার ওপর গণভোট।’ বলা বাহুল্য, এই ব্যক্তি নির্বাচনের মর্মার্থ সঠিক অনুধাবন করেছিলেন; অন্তত পরবর্তী সময়ের ইতিহাস তা-ই বলে।

 

এদিকে উপকূলীয় অঞ্চলে ১২ নভেম্বর হয়ে গেল এক প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়; হলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। মৃতের সংখ্যা ছিল পাঁচ থেকে ১০ লাখ। বিধ্বস্ত বাড়িঘরের কারণে বহু মানুষ হয়েছিল আশ্রয়হীন। কিন্তু ত্রাণকাজে সরকারি উদাসীনতা ছিল লক্ষণীয়। রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া সংগত কারণে ছিল তীব্র। মওলানা ভাসানী নির্বাচন বর্জন করে স্লোগান তুললেন, ‘ভোটের আগে ভাত চাই।’ কিন্তু বঙ্গবন্ধু নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তে অনড় রইলেন। ভবিষ্যৎ তাঁর দূরদর্শিতার পক্ষে রায় দিয়েছিল। তিনি নির্বাচন না পিছিয়ে উপদ্রুত অঞ্চলে পরবর্তী সময়ে নির্বাচন করার প্রস্তাব দেন, যা গৃহীত হয়েছিল।

 

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রচারণায় একটি প্রচারপত্র বেশ জোরালো ভূমিকা পালন করেছিল জনমত আকর্ষণে। প্রচারাভিযানে অজস্র কথার চেয়ে প্রচারপত্রটি অল্প কথায় বলে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ বাঙালির জন্য কী চায়। ‘সোনার বাংলা শ্মশান কেন’ শিরোনামের প্রচারপত্রের বক্তব্য নিচের সারণি থেকে পরিষ্কার হতে বাধ্য :

 

 

 

নির্বাচনের কয়েক দিন আগে একজন বিদেশি সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বরাদ্দ আসনের দুটি ছাড়া আওয়ামী লীগ সব আসনে জয়ী হবে। আরো বলেছিলেন, দুটি আসন পাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে রাজা ত্রিদিব রায় এবং ময়মনসিংহ থেকে নূরুল আমীন। ফলাফল তা-ই হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু জ্যোতিষী ছিলেন না; তবে তাঁর কাছে পর্যাপ্ত তথ্য ছিল। নেতার কাছে এমন তথ্য থাকতে হয়, নইলে শুধু বুলিবাগিশিতে নেতা হওয়া যায় না। উপরন্তু এটাও বুঝতে হবে যে বঙ্গবন্ধু ’৭০-এর নির্বাচনকে কী পরিমাণ আত্মস্থ করেছিলেন যে নির্বাচনটির নাড়ি-নক্ষত্র তাঁর অজানা ছিল না।

 

 

 

নির্বাচন ও ফলাফল

 

৭ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের নির্ধারিত ১৬২ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে নির্বাচন হয়। ১৭ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের ২৮২টি আসনে নির্বাচন হয়। একাত্তরের ১৭ জানুয়ারি জাতীয় পরিষদের অবশিষ্ট ৯টি আসনে পূর্ব পাকিস্তানে নির্বাচন হয়। একই দিন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের ১৮টি আসনে নির্বাচন হয়। পশ্চিম পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের নির্বাচন হয় ৭ ডিসেম্বর; আর প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন হয় ১৭ ডিসেম্বর।

 

জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগ (সংরক্ষিতসহ) ১৬৯টি আসন পায়; অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু যা বলেছিলেন। পশ্চিম পাকিস্তানে ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) সংরক্ষিতসহ আসন পায় ৮৮টি। লক্ষণীয়, আওয়ামী লীগ পশ্চিম পাকিস্তানে একটি আসনও পায়নি; আর পিপিপি পূর্ব পাকিস্তানে একটি আসনও পায়নি। নিচের সারণিতে বরাদ্দ আসন ও পূর্ব পাকিস্তানের ফলাফল দেওয়া হলো :

 

 

 

নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে জাতীয় পরিষদে ও প্রাদেশিক পরিষদে বিভিন্ন দলের আসনসংখ্যা নিম্নরূপ :

 

 

 

নির্বাচনে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর করুণ দশা লক্ষণীয়। তবে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ওয়ালী ন্যাপের সভাপতি খান আবদুল ওয়ালী খানের একটি মন্তব্য রাজনীতিতে বেশ চমক সৃষ্টি করে। তিনি বলেছিলেন, ‘এক অর্থে এর [নির্বাচনের] গুরুত্ব তাৎপর্যপূর্ণ; দেশ রাজনৈতিকভাবে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে।’ মন্তব্যকারীর বাস্তবানুগ বিবেচনাবোধ ও দূরদৃষ্টির তারিফ করতে হয়। দেশ কিন্তু আর জোড়া লাগেনি; মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি ’৭০-এর নির্বাচনের সিদ্ধান্তের রাজনৈতিক-সামরিক বাস্তবায়ন করেছে।

 

’৭০-এর নির্বাচন বঙ্গবন্ধু নেতৃত্বের অগ্নিপরীক্ষা ছিল, যাতে তিনি উতরে গেছেন সফলভাবে। তিনি যদি নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে অটল না থাকতেন, তাহলে বাঙালির ভবিষ্যৎ অকল্পনীয় ছিল। এলএফও ও ঘূর্ণিঝড়সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর বিচক্ষণতা ও দূরদৃষ্টির কারণে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে; আর এই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় যে ঘটনাপ্রবাহ, তার অনিবার্য পরিণতি স্বাধীন বাংলাদেশ।

 

লেখক : বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)

 

 

 

প্রথম বিদেশ

 

সম্মেলনে আসা রুশ লেখক আসিমভ এবং সরকারের রোষানলে পড়ে তুরস্ক ছেড়ে রাশিয়ায় থাকা লেখক নাজিম হিকমতের সঙ্গে দেখা হয়

 

১৯৫২ সালে চীনের পিকিংয়ে অনুষ্ঠেয় এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক রিম পিস কনফারেন্সে যোগ দিতে প্রথম বিদেশ যান বঙ্গবন্ধু। উড়োজাহাজে করে প্রথমে যান রেঙ্গুন। বার্মা বা ব্রহ্মদেশ তখন স্বাধীন। সেই হিসাবে বঙ্গবন্ধুর প্রথম বিদেশ বার্মা। সেখানকার একটি বিশ্রামাগারে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা হয়। ওখানে বেশ কয়েকটি প্যাগোডা দেখলেন, একটা প্যাগোডার ভেতরেও ঢুকলেন। গেলেন রেঙ্গুন ক্লাবেও। পরদিন খুব ভোরে রওনা দিয়ে পৌঁছেন থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে। চা-নাশতা সেরে এক ঘণ্টা পর হংকংয়ের উড়োজাহাজে চেপে নামেন কাইতেক বিমানবন্দরে। থাকার ব্যবস্থা হলো কৌলুন হোটেলে। ওই দিন রাতে ও দিনে ঘুরে দেখলেন হংকং। নদীর এক পারে হংকং, আরেক পারে কৌলুন। বঙ্গবন্ধু তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে লিখেছেন, ওখানে জিনিসপত্র খুব সস্তা। তবে বিক্রেতাদের সঙ্গে দামাদামি করতে হয়। পকেটমারেরও উপদ্রব আছে। হেঁটে সেতু অতিক্রম করে সেনচুন যান। কমিউনিস্ট চীনের প্রথম স্টেশন এই সেনচুন।

সেখান থেকে ক্যান্টন। পার্ল নদীর তীরে বিশাল এক হোটেলে থাকার ব্যবস্থা হয়। এখান থেকে প্লেনে পিকিং যাওয়ার পথে তাঁদের পেরোতে হয় দেড় হাজার মাইল চীনা এলাকা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যান বঙ্গবন্ধু। থাকার ব্যবস্থা হয় পিকিং হোটেলে। পিকিংয়ে শান্তি সম্মেলনে অংশ নেওয়া ছাড়াও বেশ কিছু দর্শনীয় জায়গা দেখেন। শহরের ভেতরেই ফরবিডেন সিটি। একসময় সম্রাটরা অমাত্যবর্গ নিয়ে এখানে থাকতেন। সাধারণ লোকদের জন্য নিষিদ্ধ এলাকাটায় পার্ক, লেক, প্রাসাদ—সব কিছুই আছে। পরদিন গেলেন সামার প্যালেসে। দেখেন পে ইয়ং পার্ক ও স্বর্গমন্দির। ফসল যেন ভালো হয় সে জন্য ওখানে পূজা দিত চীনারা। শান্তি সম্মেলনে বাংলা ভাষায় বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু, এ কারণে তাঁকে অভিনন্দিত করেন পশ্চিমবঙ্গের লেখক মনোজ বসু। সম্মেলনে আসা রুশ লেখক আসিমভ এবং সরকারের রোষানলে পড়ে তুরস্ক ছেড়ে রাশিয়ায় থাকা লেখক নাজিম হিকমতের সঙ্গে দেখা হয়। সম্মেলনের পর কয়েক দিন ঘুরে বেড়ান তিয়েনশিং, নানকিং, সাংহাই, হ্যাংচো।