রেলের জমি উদ্ধারে যাওয়া কর্মকর্তাদের ধাওয়া

প্রকাশিত: ১২:৩১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২২, ২০২৪

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:

ময়মনসিংহ রেলস্টেশন এলাকায় রেলওয়ের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যাওয়া কর্মকর্তাদের ধাওয়া দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে স্থানীয়দের ধাওয়ায় অভিযানে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। স্টেশন জামে মসজিদের সামনের অংশসহ কয়েকটি দোকান উচ্ছেদের সময় সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগের কর্মকতা মো. আব্দুস সোবহানের নেতৃত্ব সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ অভিযান চালানো হয়।
জানা গেছে, রেলওয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে বুলডোজার দিয়ে মসজিদের সামনের অংশে কয়েকটি দোকান ভাঙা শুরু করলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মুসল্লিসহ স্থানীয়রা। বিক্ষোভকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে কর্মকর্তাদের ধাওয়া দেন। এ সময় তারা বুলডোজার ভাঙচুরের পর চালককেও মারধর করেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পালিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান রেলওয়ের কর্মকর্তারা। পরে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা ট্রাফিক মোড়ের সামনে এসে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। ঘণ্টাখানেক পর সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় তাদের সঙ্গে মসজিদের ইমামসহ সংশ্লিষ্টদের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তার আলোচনা হয়।
রেলওয়ের মসজিদের ইমাম রফিকুল আলম হামিদীর ভাষ্য, অবৈধ দখলদারদের জায়গায় না গিয়ে মসজিদের মিনার সংলগ্ন দোকান ভাঙচুর করছিল। পরে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা সজিব মোহাম্মদ জাকির রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের বলেন, মসজিদের কোনো অংশ ভাঙা হবে না। তাঁর এমন নিশ্চয়তা দেওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রেলওয়ে জংশন স্টেশন গেটের আশপাশের হোটেল, রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকানসহ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কথা রয়েছে। অনেকে নোটিশ পেয়ে ভোর থেকেই নিজ স্থাপনা সরিয়ে ফেলেন। ময়মনসিংহ রেলস্টেশনসহ আশপাশের এলাকায় ৬০ থেকে ৭০ একর জায়গা অবৈধ দখলদারদের হাতে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
রেলওয়ের জায়গা দখল করে ব্যবসা করা ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা একসময় এসব জায়গা ইজারা নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। পরে রেলওয়ের সিদ্ধান্তে তা বাতিল হয়। পরে আর ইজারা দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ কারণে তাদের পুনর্বাসনের দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে রেলওয়ের বিভাগীয় ভূসম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা মো. আব্দুস সোবহান বলেন, ‘আমরা আজ একশর বেশি অবৈধ স্থাপনা
উচ্ছেদ করতে পারতাম। কিন্তু মসজিদের ইমামের ভুলের জন্য অবৈধ দখলদাররা চড়াও হয়ে গোলমাল শুরু করে।’