মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্মাণশ্রমিক হত্যা মামলার তিন আসামিকে জামিন দেওয়ার প্রতিবাদে মুন্সীগঞ্জ আদালতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে দুই আইনজীবীর সঙ্গে তাদের তর্ক ও হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।
গতকাল বুধবার দুপুর ২টার দিকে আইনজীবী সমিতি ভবন প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইসতিয়াক সম্রাট নামের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হন নির্মাণশ্রমিক সজল। এ ঘটনায় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামি মুন্সীগঞ্জ সদরের সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সোহেল, আক্তার হোসেন চৌধুরী ও ইব্রাহিম সর্দারকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। বুধবার মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তাদের জামিন শুনানি ছিল। শুনানি শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিচারক কাজী আবদুল হান্নান ওই তিন আসামির জামিন মঞ্জুর করেন।
এ খবর পেয়ে দুপুর ১টার দিকে শতাধিক শিক্ষার্থী শহরের শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মুন্সীগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে যান। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে জজ আদালতের নিচতলার বারান্দায় ঢুকলে আইনজীবীরা তাদের বুঝিয়ে মাঠে ফেরত পাঠান। এ সময় তারা ওই মামলায় নিযুক্ত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকলে কয়েকজন আইনজীবী এর প্রতিবাদ করেন। এর জের ধরে আইনজীবীদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তারা আইনজীবী সমিতি ভবনের ভেতর ঢোকার চেষ্টা করলে আইনজীবীরা বাধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। তর্কে জড়িত দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে তারা সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে অভিযোগ দাখিল করে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
আন্দোলনরত একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তাদের ভাইদের হত্যা করে ফ্যাসিবাদী সরকার। ওই মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা এত দ্রুত জামিন পাওয়ায় তারা বিস্মিত।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক শিক্ষার্থী ফারদিন হাসান আবির বলেন, দুই আইনজীবী তাদের গালাগালসহ কয়েকজনকে চড় মেরেছেন। তারা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচার চাইতে গেলে ফ্যাসিবাদের দোসররা মারধরের ঘটনা ঘটালেন।
এ বিষয়ে শহর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহবুব-উল-আলম স্বপন জানান, আইনজীবী সমিতি বরাবর শিক্ষার্থীরা একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। সমিতির পক্ষে তারা সেটি রেখেছেন।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান জানান, এ বিষয়ে কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি। তবে আইনজীবী সমিতিতে ছাত্ররা একটি অভিযোগ দিয়েছে বলে শুনেছেন।