লুকিয়ে কুসিকের ঠিকাদাররা উন্নয়নকাজে ধীরগতি

প্রকাশিত: ৩:১২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২৪

কুমিল্লা প্রতিনিধি:

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) আওয়ামী লীগ সমর্থিত অধিকাংশ ঠিকাদার ও কাউন্সিলর আত্মগোপনে রয়েছেন। কারও কারও নামে হয়েছে হত্যাসহ একাধিক মামলা। এসব ঠিকাদার ও কাউন্সিলরের নামে কুসিকের ৪১৫ কোটি টাকার উন্নয়নকাজের দরপত্রের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। কাজের ৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ সম্পন্ন হলেও বাকি কাজ কখন শেষ হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। অধিকাংশ রাস্তা ও ড্রেনের কাজ বন্ধ থাকায় দেখা দিয়েছে নাগরিক ভোগান্তি। তবে কুসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ হস্তান্তর না হলে কার্যাদেশ বাতিল করা হবে।

কুসিক সূত্রে জানা যায়, নগরীর সড়ক মেরামত ও ড্রেনেজ উন্নয়নকাজের ৬৯ প্যাকেজে ৪০৭ কোটি টাকা দরপত্রের কাজ চলছে। এসব কাজের কোনোটিরই ৩০ শতাংশের বেশি হয়নি। আত্মগোপনে থাকা কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঠিকাদাররা কেউবা প্রতিনিধি পাঠিয়ে মাঠে কাজ করতে রাজনৈতিক সমস্যার কথা জানিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর বেশ কিছু সড়কে মেরামত ও ড্রেনেজ উন্নয়ন গত বছর শুরু হয়ে এখনও শেষ হয়নি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অধিকাংশ কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে বৃষ্টি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে অনেক সড়ক। কান্দিরপাড়-রানীরবাজার, পুলিশ লাইন-রেইসকোর্স ও ফৌজদারি সড়কের কাজ দীর্ঘ দিন বন্ধ আছে। তবে বুধবার থেকে কান্দিরপাড় কালীমন্দিরের সামনের সড়কে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ঢালাই শুরু হয়েছে। নগরীর পুরাতন বিমানবন্দর এলাকার রাস্তাঘাট মেরামতে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে কার্যাদেশ দেওয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনএস গ্যালারিকে। সরকার বদলের পর সেখানকার কাজ সময় মতো করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নগরীর ধনেশ্বর এলাকায় ৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ড্রেনেজ উন্নয়নে কাজ পান আওয়ামী লীগ সমর্থিত একটি যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেখানেও কাজ অনেকটা বন্ধ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদারের প্রতিনিধি বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে সময় মতো কাজ করা যাচ্ছে না। অসময়ের বৃষ্টি তো আছেই। তাই কাজ শেষ করতে সময় বাড়ানোর আবেদন করা হবে।’
কুসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সায়েম ভূঁইয়া বলেন, কার্যাদেশ অনুসারে অধিকাংশ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ আগামী ২৫ জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। কিছু কাজ এর আগেই শেষ হবে। তবে কিছু ঠিকাদার আত্মগোপনে থাকায় কাজের গতি অনেক কম। তবে কেউ কেউ আত্মগোপনে থাকলেও তাদের প্রতিনিধিরা কাজ সচল রাখার চেষ্টা করছেন। আমরা তাদের কঠোর বার্তা দিয়েছি। সময় মতো কাজ না করতে পারলে কার্যাদেশ বাতিল করে দেব।

কুসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছামছুল আলম বলেন, এ অর্থবছরে কোনো ঠিকাদারকে শোকজ করা হয়নি। আমরা চাই নির্ধারিত সময়েই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ বুঝিয়ে দেবেন। কার্যাদেশ বাতিল করে পুনঃদরপত্রে গেলে আরও অনেক সময় বাড়াতে হবে। এতে নাগরিক ভোগান্তি আরও বাড়বে।