অধ্যক্ষকে বরখাস্ত না করলে থামবেন না প্রভাষক তামান্না

প্রকাশিত: ৩:২৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২৪

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করে সমালোচিত ও চাপে পড়েছেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারির সঙ্গে অনৈতিক আচরণ ও অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে। তাঁর বরখাস্তের দাবিতে অনশন করেছেন ওই কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্না। এই প্রেক্ষাপটে অধ্যক্ষ রউফের বিরুদ্ধে মামলা করতে কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

গত সোমবার লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (শিক্ষা) এস এম শাফায়াত আখতার নূর স্বাক্ষরিত অফিস পত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়। গতকাল বুধবার পত্রটির বিষয়ে জানাজানি হয়।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ফটকে গত রোববার অনশনে বসেন প্রভাষক তামান্না। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার শরবত খাইয়ে তাঁর অনশন ভাঙান। বৃহস্পতিবারের (আজ) মধ্যে অভিযুক্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। এ সময় পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) নুরে তাসনিম উপস্থিত ছিলেন।

প্রভাষক তামান্না জানান, উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ পদে আব্দুর রউফ সরকার ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যোগদান করেন। তখন থেকেই তিনি শিক্ষক-কর্মচারীর ওপর অন্যায় ও অনৈতিক আচরণ শুরু করেন। তাঁর শক্তির প্রধান উৎস ছিলেন সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তাঁর ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ।
আন্দোলন চলাকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে রউফ ফেসবুকে লিখেন, “আমাদের চোখের সামনে একটি ‘প্রতিবন্ধী প্রজন্ম’ বেড়ে উঠছে, যারা এ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য জানে না।”

তামান্না সমকালকে বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে যিনি এ ধরনের পোস্ট দিয়েছেন, সেই ‘লম্পট’ অধ্যক্ষকে বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত তাঁর প্রতিবাদ চলবে। আবু সাঈদরা পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছেন। সেই শহীদদের আত্মার শান্তির জন্য আওয়ামী লীগের দোসরদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তিনি জীবন দেবেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার বলেন, অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জরুরি চিঠি দেওয়া হয়েছে।