আরও ১ হাজার পরিবারের তৃষ্ণা মেটাল হাইসাওয়ার

প্রকাশিত: ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২৪

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

স্বামী-সন্তানসহ ছয় সদস্যের পরিবার আমেনা খাতুনের। কক্সবাজারের রামুর চাকমারকুল ইউনিয়নের আহমেদ পাড়া গ্রামে তাঁর বাড়ি। কর্মচঞ্চল দিন কাটিয়ে ক্লান্ত শরীরে খাবার পানির জন্য ছুটতে হয় আরও এক কিলোমিটার। তার মতো আহমেদ পাড়ার হাজারো পরিবারের নিত্য দুর্ভোগ এটি। সুপেয় পানির তীব্র সংকটে ভুগছেন তারা। তাদের জন্য ত্রাতা হয়ে এসেছে ডেনমার্কের ‘হাইসাওয়া’ নামে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। যৌথ প্রচেষ্টায় পাম্প বসিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে তৃষ্ণা মেটানোর জল।
আমেনা খাতুন বলেন, শুষ্ক মৌসুমে টিউবওয়েলেও পানি থাকে না। আর বর্ষায় প্লাবিত হলেও তৃষ্ণা মেটানোর জন্য সুপেয় জল মেলে না। গ্রামের অধিকাংশ মানুষকে এক কিলোমিটার দূর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হতো। হাইসাওয়ার মাধ্যমে সেই দুঃখ দূর হয়েছে।
হাইসাওয়া জানায়, সুপেয় পানি সংকটের কথা জানার পর ডেনমার্ক সরকারের কাছ থেকে ১৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা অনুদান নেওয়া হয়। উপকারভোগীরা দেন আরও দেড় লাখ। মোট ১৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকায় সৌরবিদ্যুৎচালিত ‘পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। গত ১৬ জুলাই উদ্বোধনের পর থেকে সহস্রাধিক পরিবারে পৌঁছে যাচ্ছে সুপেয় পানি।
চাকমারকুলের ইউপি সদস্য মরিয়ম বেগম বলেন, আহমদের পাড়ার অধিকাংশ বাসিন্দা অসচ্ছল হওয়ায় গভীর নলকূপ বসাতে পারেনি। এ অবস্থায় হাইসাওয়ার মাধ্যমে আবেদন করলে গ্রামবাসীর জন্য পানির স্থায়ী ব্যবস্থা হয়। জমিদাতা ছৈয়দ আহমদ বলেন, এলাকার মানুষের পানি সংকট দূর হবে শুনেই পাম্প বসানোর জন্য জমি দিয়েছি।
হাইসাওয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল ওসমান বলেন, নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্যবিধি, স্যানিটেশন এবং প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠী নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে দেশের ২৭ জেলায় ১১ শতাধিক ইউনিয়নে ৮৪ হাজারেরও বেশি সুপেয় পানির পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ১৭ লক্ষাধিক স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে।
কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কক্সবাজারে নিরাপদ পানির সংকট তীব্র হচ্ছে। এ সংকট দূর করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পাশাপাশি
হাইসাওয়াসহ বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা কাজ করছে।