ঢাকা প্রতিনিধি:
ঢাকার পাঁচতারকা হোটেলে কাউন্সিলরদের করা হচ্ছে ‘জামাই আদর’। বাফুফে নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া প্রার্থীরা ডেলিগেটদের প্রতিনিয়ত ফোন করে ভোট চাচ্ছেন। কেউ কেউ কাউন্সিলরদের সঙ্গে সরাসরি গিয়ে দেখা করে ফুটবল নিয়ে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরছেন। ভোটারদের মন জেতার জন্য সব প্রচেষ্টায়ই করে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। সভাপতি পদে তাবিথ আউয়ালের জয় সময়ের অপেক্ষা। সিনিয়র সহসভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন ইমরুল হাসান। সহসভাপতির চার পদে ছয় প্রার্থী থাকলেও আজ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনের সব আকর্ষণ সদস্যপদ ঘিরেই। ১৫টি সদস্যপদের বিপরীতে ৩৭ প্রার্থী গত কয়েক দিন ধরেই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাফুফের আগের নির্বাচনে কাউন্সিলরশিপ নির্ধারণে ছিল রাজনৈতিক প্রভাব। সরকার পরিবর্তনের পর এবার ভোটার তালিকায় নতুনের আধিক্য। একই সঙ্গে প্রার্থীও অনেক নতুন। যে কারণে সদস্যপদের নির্বাচনে জমজমাট লড়াই হবে বলেই ধরে নিয়েছেন সবাই। পুরোনো যারা এবার প্রার্থী হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছেন বাফুফে নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, ইমতিয়াজ হামিদ (সবুজ), জাকির হোসেন চৌধুরী, টিপু সুলতান, বিজন বড়ুয়া, মো. মাহি উদ্দিন আহমদ (সেলিম), মো. আমের খান ও সত্যজিৎ দাস রুপু।
গতবার সহসভাপতি পদে হেরে যাওয়া আমিরুল ইসলাম বাবু আবারও নির্বাহী কমিটিতে ঢোকার লড়াইয়ে আছেন। এবার অবশ্য সদস্যপদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। শুধু তাই নয়, নারী জাতীয় দলের ম্যানেজার বাবু ভোটের লড়াইয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন। নিজের জয়ের ব্যাপারেও বেশ আত্মবিশ্বাসী তিনি, ‘গত চার বছর ফুটবল ফেডারেশনে ছিলাম না বলে অনেকেই আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করেছেন। এবার সহসভাপতি পদে করতে পারতাম। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে সদস্যপদের ১৫ জনের একজন হতে পারাই শ্রেয়।’
পুরোনো এসব সদস্যকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন নতুন ও তরুণ বেশ কয়েকজন প্রার্থী। এর মধ্যে আছেন ফর্টিস ফুটবল ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ শাহীন হাসান। নির্বাচিত হলে তৃণমূলের ফুটবলে জোর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবারের নির্বাচনে সর্বকনিষ্ঠ এ প্রার্থী, ‘জেতার ব্যাপারে আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী। সবচেয়ে কনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে সবাই আমাকে উৎসাহ দিচ্ছেন। আমি যদি নির্বাচিত হয়ে আসতে পারি, তাহলে একাডেমি নিয়ে কাজ করব। তৃণমূল ফুটবল কীভাবে উন্নতি করা যায়, সেই গাইডলাইনগুলো দেব। ডিএফএতে যেগুলোতে খেলা বন্ধ আছে, সেগুলোতে বিশেষ নজর দেব।’ তৃণমূল ফুটবল নিয়ে কাজ করা চুয়াডাঙ্গা ডিএফএর সভাপতি ব্যবসায়ী এখলাছ উদ্দিন প্রথমবারের মতো নির্বাচন করতে এসে চমক দেখাতে পারেন। সদস্য পদে ভালোভাবে এগিয়ে আছেন সাবেক ফুটবলার মো. সাইফুর রহমান মনি। নারী প্রার্থী হিসেবে সাবেক জাতীয় দলের ফুটবলার ও বসুন্ধরা কিংসের কোচ মাহমুদা খাতুন অদিতি ভোটারদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছেন।
নতুন ও পুরোনো প্রার্থীদের মধ্যে কিছু বিতর্কিত ব্যক্তিও এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তার মধ্যে ফিফা থেকে নিষিদ্ধ বাফুফের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের স্ত্রী তাসমিয়া রেজোয়ানা অন্যতম। ডেলিগেটদের নিয়ে হওয়া বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে রেজোয়ানার উপস্থিতিটা ভালোভাবে নেয়নি অনেকে। শুধু তাই নয়, ফর্টিস গ্রাউন্ডে এবং বৃহস্পতিবার ঢাকা ক্লাবের অনুষ্ঠানে আবু নাঈম সোহাগের উপস্থিতিতে কাউন্সিলরদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। ফুটবলারদের পাওনা নিয়ে নয়ছয় করা ফেনী সকার ক্লাবের সাবেক ম্যানেজার সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া শাহীনও আছেন নির্বাচনের লড়াইয়ে। তাই এবার ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কাউন্সিলররা প্রার্থীর অতীত কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করছেন।