পটুয়াখালীতে কাঁচা মরিচের ঝাল কমলেও বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর খুচরা বাজারগুলোতে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এক সপ্তাহ আগে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ১১০-১১৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যাবধানে একই পেঁয়াজ এখন ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে শীতকালীন সবজির সরবরাহ ভালো থাকায় অস্থিরতা কমেছে কাঁচাবাজারে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি কাঁচা মরিচের দাম কমেছে প্রায় ২৫০ টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকালে পটুয়াখালী পৌর নিউমার্কেটসহ শহরের বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
পটুয়াখালী পৌর নিউ মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ১২০ টাকা এবং মিশরের পেঁয়াজ ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে একই পেঁয়াজের দাম ছিল ২০-৪০ টাকা কম। যেমন, দেশি পেঁয়াজ ১১০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৯০ টাকা আর মিশরের পেঁয়াজ বাজারেই ছিল না।
মোশারফ স্টোরেরর মালিক মোশারফ হোসেন বলেন, গত কয়েক দিন পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আজকে যে দামে বিক্রি করি কাল তার থেকে বেশি দামে কিনতে হয়। কিন্তু কাস্টমারদের আমরা এগুলো বোঝাতে পারি না। তারা তো আমাদের গালাগালি করে। আমরা যেভাবে কিনি সেভাবেই বিক্রি করি।
পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১২০-১৫০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজে ৯৫-১০০ টাকা এবং মিশরের পেঁয়াজ ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, বন্যার প্রভাব পড়েছে পেঁয়াজের বাজারে।
মেসার্স সততা বাণিজ্যালয়ের মালিক আব্দুস ছালাম মিয়া বলেন, বর্তমানে দেশি পেঁয়াজের মৌসুম প্রায় শেষ। অন্যান্য বছর এই সময় বাজারে ফরিদপুরের মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আসে তাই পেঁয়াজের দামও থাকে কম। কিন্তু এ বছর বন্যার কারণে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আসেনি তাই হয়তো দাম বেশি।
মেসার্স আল্লাহর দান ভান্ডারের ম্যানেজার মো. মোতালেব বলেন, আমরা বরিশাল থেকে পেঁয়াজ আনি ২০/২৫ বস্তা। সেই পেঁয়াজ বিক্রি করতেই হিমশিম খাইতে হয়। আমরা জানমু কেমনে, দাম কেমনে বাড়ছে? আমরা যেভাবে কিনে আনি সেভাবেই বিক্রি করি। বর্তমানে ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ।
এদিকে শীতকালীন সবজির সরবরাহ ভালো থাকায় অস্থিরতা কমেছে কাঁচাবাজারে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কমেছে প্রায় ২৫০ টাকা। এছাড়া মৌসুমের প্রথম সবজি, শিম, লাউ, ফুলকপি বেগুনসহ অনেক পণ্যের দাম কমেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, শিম ১৪০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ফুলকপি ৮০ টাকা, বাধাকপি ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, এবং আলু ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস লাউ ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহ আগে একই সবজি ছিল আকাশ ছোঁয়া দাম। যেমন- প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৪৮০ টাকা, শিম ২৫০ টাকা, বেগুন ১৫০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, ফুলকপি ১১০ টাকা, বাধাকপি ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৮০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা এবং আলু ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি পিস লাউ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা দরে। বর্তমান বাজারে সবজির মূল্য কমায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।
সবজি কিনতে আসা মো. আসাদুল হক নামে এক ক্রেতা বলেন, আমরা যারা নির্ধারিত বেতনে চাকরি করি তাদের জন্য সংসার চালানো খুব কষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সবজির দাম কমায় আমরা সত্যিই খুশি। তবে এই পরিবর্তনের জন্য জেলা প্রশাসনের ভূমিকা অনেক বেশি।
সততা ভান্ডারের সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পণ্যের দাম বেশি থাকলে আমাদের লোকসান হয়, কারণ বেচা-বিক্রি কম। শীতকালীন সবজিগুলো বাজারে আসায় পণ্যের দাম কমছে। ৮-১০ দিনের মধ্যেই সকল সবজির দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালের মধ্যে চলে আসবে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা মাজিস্ট্রেট ও জেলা টাস্কফোর্স কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মাদ তারেক হাওলাদার বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে জেলা টাস্কফোর্স কমিটি নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছে। সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণে সাম্প্রতিক সময়ে নিউমার্কেটের ৪ অসাধু ব্যবসায়ীকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরপরই আমরা সবজির বাজারে দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। সকলের প্রতি আমাদের পরিষ্কার বার্তা, বাজারে কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। যারা অসদুপায়ে ব্যাবসা করার চেষ্টা করবে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।