জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আদলে কমিশন গঠন: প্রতারণার অভিযোগে আটক ৭
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
বিএইচআরসির চেয়ারম্যান দিলদার (বাঁয়ে) ও তার ব্যবহৃত গাড়ি (ডানে)। ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (এনএইচআরসি) আদলে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি) গড়ে তুলে দেশে বিদেশে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছিল একটি চক্র। সেই চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার তেজগাঁও থানার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির মহাসচিব মো. সাইফুল ইসলাম দিলদার (৬৫), বাদল মোল্লা (৪০), রুহুল আমিন (৪৩), তাজউদ্দিন (৪৮), সুচি আফরিন (২৬), কাইয়ুম (৩৫) ও তামিম আহমেদ (১৭)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে সেক্রেটারি জেনারেল বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন লেখা ২০টি ভিজিটিং কার্ড, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বিভিন্ন ব্যক্তির ৯৬টি আইডি কার্ড, ১০টি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের গাইডলাইন বই, একটি কর্মকর্তা-কর্মচারির তালিকা, ১১টি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বিভিন্ন ধরনের সিল, একটি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কালো কটি জ্যাকেট, ১৫টি সদস্য ফরম, ২০টি ক্যালেন্ডার, একটি মানি রিসিপ্ট বই, তিনটি সিপিইউ, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন লোগো ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়।
আজ সোমবার বিকালে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান উপ-পুলিশ কমিশনার এইচএম আজিমুল হক।
তিনি আরও জানান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নামে একটি বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা বিভিন্নভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছে। আইন বলে মানবাধিকার ‘কমিশন’ হিসেবে কমিশন শব্দটি শুধুমাত্র জাতীয় মানবাধিকার কমিশন লিখতে পারবে। সেই আলোকে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নামীয় সংস্থাটির বিরুদ্ধে হাইকোর্ট ডিভিশনে রিট করলে হাইকোর্ট থেকে ‘কমিশন’ শব্দটি বাদ দেওয়ার জন্য আসামি সাইফুল ইসলাম দিলদারের ওপর নির্দেশ আসে। কিন্তু তিনি নির্দেশনা অমান্য করে বিভিন্ন ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে জনসাধারণের সঙ্গে ক্রমাগত প্রতারণা করে চলছেন। আদালত সংস্থাটি নামের শেষে ‘কমিশন’ ও সংক্ষেপে ‘বিএইচআরসি’ শব্দ দুটি কোথাও ব্যবহার করতে পারবে না- এমন নির্দেশনা প্রদান করা সত্ত্বেও কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছেন না সংশ্লিষ্টরা।
উপ-পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, তারা তাদের নিজস্ব ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে যুক্তরাজ্য মানবাধিকার কনভেনশন ২০২৩ নামে একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হবে বলে লোক সংগ্রহ করছে। পরে বিজ্ঞাপনটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আইন বিভাগের আখতারুজ্জামান অফিসে অবস্থান করাকালীন তার নজরে আসে। আসামি সাইফুল ইসলাম দিলদার তাদের ফেসবুক এবং ওয়েবসাইটে সদস্য পদ সংগ্রহ ও বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর কমিটি গঠন ইত্যাদি প্রচার করে জনসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। এ ঘটনায় আখতারুজ্জামান বাদি হয়ে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়।