নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য বেশি ছড়াচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে রাজনীতি নিয়ে। গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যের মধ্যে ৪৩ শতাংশই রাজনৈতিক। এর প্রধান লক্ষ্য অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছড়ানো ভুল তথ্যের প্রায় ৪৯ শতাংশই ছড়ানো হয়েছে তাঁকে মহান করে। আর ড. ইউনূসকে ঘিরে ছড়ানো ভুল তথ্যের ৬৫ শতাংশই ছিল নেতিবাচক।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশের আটটি ফ্যাক্ট-চেক ওয়েবসাইটের ফ্যাক্ট-চেক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে ডিসমিসল্যাব। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে ফ্যাক্ট-চেক প্ল্যাটফর্মগুলো ৯১৭টি ইউনিক ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি (৪২ দশমিক ৯ শতাংশ) ছিল রাজনৈতিক। এর পরেই রয়েছে ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্য (সাড়ে ১১ শতাংশ)।
ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডিসমিসল্যাবের গবেষণা প্রধান মিরাজ আহমেদ চৌধুরীর মতে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় ভুল তথ্য বা অপতথ্য বেশি ছড়ায়। গত জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন ঘিরেও এ ধরনের প্রবণতা দেখা দিয়েছিল, যা নির্বাচনের পর কমে এসেছিল।
প্রতিবেদনে ডিসমিসল্যাব বলছে, ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যের ৩১ শতাংশ ভিডিও, ছবি ২৭ শতাংশ এবং গ্রাফিক কার্ড ১৯ শতাংশ। গ্রাফিক কার্ডের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যের মধ্যে ৮১ শতাংশ ছিল প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের নাম ও লোগো নকল করা। এ ধরনের ভুল তথ্যের প্রায় অর্ধেকই রাজনীতি সংশ্লিষ্ট।
এতে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের জড়িয়ে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে (৩৬ শতাংশ)। ড. ইউনূস, তাঁর সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের জড়িয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভুল তথ্য ছড়িয়েছে (৩৫ শতাংশ)। আগের বছরগুলোতে বিএনপিকে নিয়ে ভুল তথ্য বেশি ছড়ালেও এবার তা ৮ শতাংশে নেমেছে। জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে ঘিরে করে ভুল তথ্য ছড়ানো বেড়ে ১১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। যেখানে পুরোনো ছবি বা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন ছবি-ভিডিও ব্যবহার করা হয়।