সেলিনা আক্তার:
গত দ্ইু মাসে প্রায় ১ লাখ ৬৭ হাজার করদাতা ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন। প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ হাজার করদাতা ই-রিটার্ন দাখিল করছেন। শেষদিকে দৈনিক হয়তো ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ই-রিটার্ন দাখিল হতে পারে। সর্বশেষ হিসাবে এক কোটি ৭ লাখ মানুষ ই-টিআইএন নিবন্ধন নিয়েছেন।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এসব তথ্য জানান। আয়কর তথ্যসেবা মাসের উদ্বোধন উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দেওয়া যাদের বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তাদের ম্যানুয়ালি রিটার্ন গ্রহণ করা হবে না। গত ২২ অক্টোবর থেকে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সারাদেশের সব তফসিলি ব্যাংক, মোবাইল ফোন অপারেটর এবং বেশ কিছু বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ই-রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ই-রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি শেখাতে সচিবালয় ও এনবিআর ভবনে প্রশিক্ষণ এবং অনলাইন টিউটোরিয়াল দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে কাগজের রিটার্ন জমা নেওয়া হবে না। ই-রিটার্নের ক্ষেত্রে করদাতার তথ্য গোপন থাকবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান খান বলেন, ই-রিটার্ন সফটওয়্যারের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তথ্য সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে। এমনকি যারা এই প্রোগ্রাম তৈরি করেছেন তারাও করদাতার তথ্য দেখতে পারবে না। এক সার্কেলে কর দিলে ওই সার্কেল ছাড়া অন্য কেউ তাতে প্রবেশ করতে পারবে না। পাশাপাশি সাইবার আক্রমণের কথা বিবেচনায় নিয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হয়েছে। তাছাড়া এনবিআরও ডেটা সংরক্ষণ করে রাখবে। বিশ্বের প্রায় সবদেশেই এখন ই-রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করা হয়। এটা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। কোনো সমস্যা দেখা দিলে তার সমাধানও হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করদাতাদের সেবাগ্রহণ ও রিটার্ন দাখিলের সুবিধার্থে নভেম্বর মাসব্যাপী চলবে আয়কর তথ্যসেবা মাস। আয়কর রাজস্ব আহরণের শুধু অন্যতম প্রধান খাতই নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠারও কার্যকরী মাধ্যম।
কয়েক বছর ধরে কর সচেতনতা বৃদ্ধি ও নিবিড়ভাবে আয়কর তথ্যসেবা দিতে এনবিআর নভেম্বর মাসজুড়ে বিশেষ আয়কর তথ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এর প্রধান উদ্দেশ্য– কর সংস্কৃতির বিকাশ, সচেতনতা বৃদ্ধি, করদাতাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা। এবার আয়কর মেলা আয়োজনের পরিবর্তে সব কর অঞ্চলে বিগত বছরের মতো মেলার পরিবেশে নভেম্বর মাসব্যাপী আয়কর রিটার্ন গ্রহণের জন্য সেবা দেওয়া হবে।
দেশের ৮৬৯টি সার্কেলের করদাতাদের ৪১টি কর অঞ্চলে সেবা বুথ স্থাপনের মাধ্যমে নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে আয়কর রিটার্ন গ্রহণের সেবা দেওয়া হবে। আয়কর তথ্যসেবা কেন্দ্রে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন, অনলাইন রিটার্ন রেজিস্ট্রেশন, অনলাইন রিটার্ন দাখিল, ই-পেমেন্টের (এ-চালান ও অন্যান্য) ব্যবস্থা রাখা হবে।