
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সুন্দরবনে বনদস্যু বাহিনীর সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী গুলি বিনিময়ের পর ১০ জেলেকে উদ্ধার করেছেন বনবিভাগের সদস্যরা। রোববার (৩ অক্টোবর) দুপুরের দিকে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের চুনকুড়ি নদীর তকতাখালী খালের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে। পরবর্তীতে বনের মধ্যে তল্লাশির পর উদ্ধারকৃত জেলেদের নিয়ে রাত ৮টার দিকে আভিযানিক দলটি লোকালয়ে পৌঁছে। এ সময় বনদস্যুদের ব্যবহৃত তিনটি নৌকা, সোলার প্যানেল ও তাজা গুলি উদ্ধার করেন বনকর্মীরা।
উদ্ধারকৃত জেলেরা হলেন- রাজু ফকির (৪৭), রফিকুল ইসলাম (৫০), সফিকুল ইসলাম (৩৪), মফিজুর রহমান (৩৮), নজরুল ইসলাম (৫৭), মুছাক সানা (৬৭), আব্দুল আলিম (৬২), নুর ইসলাম (৪৫), হাফিজুর রহমান (৪৫) ও রবিউল ইসলাম (২৮)। এসব জেলের মধ্যে মুছা সানা ও মফিজুর বনদস্যু বাহিনীর কাছে গত পাঁচদিন ধরে জিম্মি ছিলেন। উদ্ধারকৃত জেলেরা শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী, হরিনগর, চুনকুড়ি এলাকার বাসিন্দা।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের রেঞ্জ সহকারী হাবিবুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি পশ্চিম সুন্দরবনে বনদস্যুরা বেশকিছু জেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করে। বনদস্যুদের কাছে আরও ১৬ বা ১৭ জেলে জিম্মি রয়েছে বলে ফিরে আসা জেলেদের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে বনবিভাগের পক্ষ থেকে অভিযানের সিদ্ধান্ত হয়। একপর্যায়ে বিভাগীয় ও সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তার নির্দেশনা মতে সকাল থেকে কদমতলা স্টেশন কর্মকর্তা সোলায়মানের নেতৃত্বে পশ্চিম সুন্দরবনের গুরুত্বপূর্ণ এলাকসমূহে সাড়াঁশি অভিযান শুরু হয়।
অভিযানে অংশ নেওয়া এ বনকর্মকর্তা আরও বলেন, রোববার দুপুরের দিকে তাড়া চুনকুড়ি নদীর তকতাখালী খালে পৌঁছায়। এ সময় শুরুতে বনদস্যুরা গুলি ছুঁড়তে শুরু করলে তারাও পাল্টা গুলি ছুড়ে। একপর্যায়ে বনদস্যুরা বনের মধ্যে পালিয়ে গেলে জিম্মি ১০ জেলেকে উদ্ধার করা হয়। অভিযানে কৈখালী, বুড়িগোয়ালীনি স্টেশনসহ মুন্সিগঞ্জ, দোবেকী ও কাছিকাটা টহলফাঁড়ির সদস্যরা অংশ নেয়। উদ্ধারকৃত গুলি আজ সোমবার শ্যামনগর থানায় জমা দেওয়া হবে।
পায়ের চিহ্ন দেখে বনের মধ্যে যাওয়ার পরও বনদস্যুদের আটক করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সন্দেহজনক এলাকাগুলোতে টহল জোরদার করা হবে।
উদ্ধার হওয়া জেলে মুছা সানা বলেন, নৌকাপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ হাজার করে দাবি করেছিল চার সদস্যের বনদস্যু দলটি। প্রতিটি নৌকা থেকে তারা একজনকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে নিজেদের কাছে জিম্মি করেছিল। ইতিমধ্যে জিম্মি জেলেদের পরিবারের কাছ থেকে বিকাশে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে ২০ থেকে ২২ জন জেলেকে বনদস্যু দলটি ছেড়ে দিয়েছে। তার পরিবারের টাকা সংগ্রহ করতে দেরি হওয়ায় তাকে পাঁচদিন ধরে আটক রাখা হয়।