ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন: বিএনপির প্রার্থীদের সমর্থন দেবে ২০ দলীয় জোট
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীকে পূর্ণ সমর্থন দেবে ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো। শুক্রবার রাতে (২৮ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর জোরজবরদস্তি করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করা হয়। ফলে, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার বলে জনগণ মনে করেন না। এই দিবসটির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৩০ ডিসেম্বর ২০ দল ঢাকায় একটি আলোচনা সভা করবে।’ তিনি বলেন, ‘আজকের সভায় সম্প্রতি ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দোষীদের শাস্তি দাবি করা হয়। একইসঙ্গে কয়েকদিন আগে দৈনিক সংগ্রাম অফিসে হামলা ও সম্পাদক আবুল আসাদের ওপর নির্যাতনের নিন্দা জানাই।’
২০ দলীয় জোট ২০২০ সালের ২৬ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এ উপলক্ষে ২০ দলীয় জোট একটি উপ-কমিটি করেছে। এই কমিটি প্রস্তাব করবে ২০ দলীয় জোট কী কী কর্মসূচি পালন করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি ভারতে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নামে নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে বসবাসরত নাগরিকদের নিরাপত্তা ও জানমাল অনিরাপদ করে তোলা হচ্ছে। গণতান্ত্রিক বিশ্ব ও জাতিসংঘ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। ভারতে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে এ আন্দোলনে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই আইন সংসদে প্রণয়নের সময় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবিশ কুমার বাংলাদেশ, বিএনপি ও খালেদা জিয়া সম্পর্কে যে সাম্প্রদায়িক ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, ২০ দলীয় জোট তার নিন্দা জানিয়েছে।’
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতা জানান, জোটের বৈঠকে অন্যতম শরিক জামায়াতের কেউ উপস্থিত ছিল না। জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, শুক্রবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এ কাজে যুক্ত থাকায় কোনও নেতাকেই বৈঠকে পাঠায়নি দলটি। সংবাদ সম্মেলনে তাদের না আসার বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘জামায়াতের যেসব নেতা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন, তারা ঢাকার বাইরে আছেন।’
বৈঠক সূত্র জানায়, জোটের বৈঠকে এলডিপির দুই অংশই উপস্থিত ছিল।
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এলডিপির একাংশের মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, অপর অংশের সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ইসলামী ঐক্যজোটের (একাংশ) মাওলানা আবদুর রকিব, জাগপার একাংশের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি, পিপলস লীগের মহাসচিব সৈয়দ মাহবুব হোসেন, ন্যাপ-ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদ খান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এহসানুল হুদা, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তবে, সাম্যবাদী দল, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের আরেকটি অংশের কোনও প্রতিনিধি বৈঠকে যাননি।
বিএনপি জোটের শরিক একটি দলের নেতা জানান, ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিবাদ হিসেবে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের যেসব সংসদ সদস্য সংসদে যোগ দিয়েছেন, তাদের পদত্যাগ করার আহ্বান জানান এলডিপির এক অংশের নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিম। যদিও এ বিষয় সামনে এগোয়নি। জোটের শরিক একটি দলের নেতা জানান, সিটি ভোটের প্রচারণায় জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা অংশ নেবেন। তবে, জামায়াতের কেউ না আসায় তাদের দলের প্রার্থী দেওয়া হবে কিনা, এ নিয়ে কোনও আলোচনা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে শাহাদাত হোসেন সেলিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেক দিন পর ২০ দলীয় জোটের বৈঠক হয়েছে। সিটি করপোরেশন, ৩০ ডিসেম্বরের ভোট চুরি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীসহ কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’ দুয়েকটি দলের কোনও নেতা না এলেও জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খানকে তারা আগেই জানিয়েছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।