মনি কিশোরকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন মিলটন খন্দকার

প্রকাশিত: ২:৩৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২৪

বিনোদন ডেস্ক:

প্রয়াত নন্দিত গায়ক মনি কিশোরের সঙ্গে গীতিকার মিল্টন খন্দকারের সখ্য অনেক পুরনো। দুজনে একসঙ্গে পাড়ি দিয়েছেন জীবনের রঙীন অনেকটা পথ । প্রিয় বন্ধুটি আজ নেই। মনি কিশোরকে নিয়ে স্মৃতির ঝাপি খুললেন জনপ্রিয় এই গীতিকার। সামাজিক মাধ্যমে স্মৃতিকথাগুলো বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগিও করেছেন তিনি।

দুজনের সম্পর্ক টম এন্ড জেরির মতো উল্লেখ করে এই অভিনেতা লিখেন, ‘কে টম কে জেরি তা জানি না। শুধু এইটুকু জানি, কার্টুন চরিত্র টম এন্ড জেরি’র মতো ছিলাম আমি আর মনি কিশোর। দুজনের দেখা হতো, সম্বোধন হতো গালি দিয়ে। এমন দিন নেই যে ঝগড়া না করে ঘরে ফিরেছি। কাজ করছি একসাথে কিন্তু কেউই কারোর মুখ দর্শন করছি না। আবার লাঞ্চ কিংবা ডিনারে পাশাপাশি বা মুখোমুখি না বসলে দুজনের কেউই খাচ্ছি না। রেগে গনগনে হয়ে আছে আমার উপর অথচ ঠিকই চামচ দিয়ে বেছে বেছে মাংস তুলে দিচ্ছে আমার পাতে। শেষবার যখন বিটিভি ক্যান্টিনে লাঞ্চ করছি। সামনের সিটে এসে বসলো। বললো, তোর ট্রেন কখন?
আমি বললাম, কিসের ট্রেন? আস্তে খা–রাক্ষস কোথাকার! আমি আস্তে খেতে শুরু করলাম। এবং আস্তে করে বললাম, খাইছিস? ঝাঁঝালো উত্তর এলো, আমার কথা তোমাকে চিন্তা করতে হবেনা। আমিই তোমার কথা চিন্তা করছি। চিন্তার ফসল এসে হাজির। বিটিভি ক্যান্টিনের রহমানের হাতে গরুর কালো ভুনা। বাইরের হোটেল থেকে মনি কিশোরের অর্থায়নে এসেছে।

কালা ভুনা খেতে পছন্দ করি তাই এই আতিয়েতা! মনি কিশোরকে নিয়ে আরও একদিনের স্মৃতিকথা নিয়ে এ গীতিকার লিখেছেন , ‘দিন তারিখটা মনে নেই। একদিন মাথার যন্ত্রণায় মারা যাচ্ছি! তখন ব্যাচেলর লাইফ। এক রুম ভাড়া নিয়ে থাকি বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে আছি। মনি কিশোর বাসায় এসে হাজির। বললো, কি রে-এই জীবনে বিছনা থেকে আর উঠবি না বলে প্রতিজ্ঞা করেছিস? বললাম, দোস্ত মাথা ব্যথা করছে, উঠতে পারবোনা। ও আচ্ছা এই কথা কিন্তু আমার যে গানের অন্তরা লিখতে হবে? উঠতে পারবো না রে ভাই। একছটাকও ধৈর্য নেই ছেঁড়ার। মুহূর্তে ক্ষেপে গেল! শোন ছাওয়াল, আমার কিন্তু তবলা বাজানো হাত।
আঙুলগুলো লোহার মতো শক্ত। তোকে উঠাতে আমার দশমিনিটও সময় লাগবে। গান আমি নিয়েই যাবো। স্টুডিও বুকিং দেয়া আছে। মনে মনে ভয় পেলাম, ও শালা আমাকে মারবে নাকি? হাত ধুয়ে এলো। বিছানায় বসে ধমক ‘দে মাথা দে, আমি ওর হাঁটুর উপর মাথা দিলাম। ব্যস্ কসাইরা যেমন গরুর মাথা বানায়, ঠিক তেমন করে মনি কিশোর আমার মাথা বানিয়ে দিল ,দুই হাতের দশ আংগুল দিয়ে। আমি ঝরঝরে হয়ে গেলাম। অন্তরা লিখে দিলাম। গান লেখা শেষে গানের পেমেন্ট চাইলাম। পাত্তাই দিলো না। বললো, তোর মাথা ম্যাসাজ দিয়ে সুস্থ করে দিলাম,আগে তার ফিস দে। এমন অসংখ্য ঘটনা আছে মনিকে নিয়ে। হয়তো তাকে নিয়ে সামনে আরও লিখবো’।