রাজধানীতে মা-মেয়েকে হত্যার অভিযোগ: স্বামী আটক

প্রকাশিত: ১:৩৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৪, ২০২৩

আমিনুল ইসলাম বাবু:

রাজধানীতে মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী এসএম সেলিমকে আটক করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন- মাহমুদা আক্তার বৃষ্টি (৩৩) ও তার মেয়ে সানজা মারওয়া (১০)। আজ বুধবার (১৪ জুন) সকালে নিউজ পোস্ট বিডিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাড্ডা থানা পুলিশ ও নিহতের ভাইসহ পরিবারের সদস্যরা।

জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (১৩ জুন) দিবাগত মধ্যরাত ১টার দিকে বাড্ডা থানাধীন পশ্চিম মেরুল বাড্ডার ১ নম্বর রোডের ৭/১ নম্বর বাড়ির জমশেদ টাওয়ারের অষ্টম তলার স্বামীর নিজ ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত গৃহবধূ বৃষ্টি আক্তারের মামা সোহেল শিকদার নিউজ পোস্ট বিডিকে বলেন, জামাতা এস এম সেলিম অন্য মেয়েদের সাথে পরকীয়া করতো। বিভিন্ন সময় ভাগ্নিকে এই বিষয় নিয়ে নির্যাতন করতো। গত তিনদিন আগেও সেলিম বাহিরে ছিল। সে বিভিন্ন সময় মেয়ে নিয়ে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে যায়। সে কোনো কাজকর্ম করতো না। শুধু ফ্ল্যাটের ভাড়া তুলে কোনরকম সংসার চালাত। প্রায় সময়ই অন্য নারী নিয়ে বাহিরে রাত্রি যাপন করতো। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এসব বিষয় নিয়ে ভাগ্নি প্রতিবাদ করাতে তাকে বিষ জাতীয় কোন কিছু খাইয়ে ও বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে।  পরে তার মেয়ে (নাতনী) সানজা মারওয়া দেখে ফেলায় তাকেও একইভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহত গৃহবধূ বৃষ্টির মামা সোহেল শিকদার। তিনি আরও বলেন, আমার ভাগ্নী মৃতা বৃষ্টি মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার চাষারী গ্রামের মোজাম্মেল হকের মেয়ে। তার স্বামীর নাম এসএম সেলিম। বর্তমানে স্বামীর নিজ বাড়ি ৭/১ রোড নং-১ পশ্চিম মেরুল বাড্ডা, জমসেদ টাওয়ারের অষ্টম তলায় পরিবারের সাথে থাকতেন। ফাহারিন নামে ৮ মাস বয়সী এক সন্তান রয়েছে মৃতা বৃষ্টির। এবং তার মেয়ে সানজা মারওয়া স্থানীয় মাদ্রাসায় ইংলিশ মিডিয়ামে পড়তো।

এ বিষয়ে আজ বুধবার (১৪ জুন)  সকালে বাড্ডা থানায় যোগাযোগ করা হলে এর সত্যতা নিশ্চিত করেন বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক এসআই সাদেক মিয়া।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ট্রিপল নাইনে খবর পেয়ে আমরা রামপুরার বনশ্রীতে ফরাজী হাসপাতালে ছুটে যাই।সেখানের জরুরী বিভাগ থেকে দিবাগত রাত ৩ টার দিকে মা ও মেয়েসহ দুজনকে অচেতন উদ্ধার করি। এরপর আজ বুধবার সকাল সোয়া ৫ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মা ও মেয়ে দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।

এসআই সাদেক মিয়া নিউজ পোস্ট বিডিকে বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মা-মেয়ের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এটি হত্যাকাণ্ড না আত্মহত্যা তা তদন্ত সাপেক্ষে ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে। তবে মা-মেয়ের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বেশ কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ পরইবারের অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত বৃষ্টির স্বামী এস এম সেলিমকে আটক করা হয়েছে।