চেনা মাঠে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ৪:৩২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২৪

ক্রীড়া ডেস্ক:

র‍্যাঙ্কিং বাড়াতে গিয়ে গত সেপ্টেম্বরে ভুটানে যাওয়া বাংলাদেশ ফুটবল দল পেয়েছিল তিক্ত অভিজ্ঞতা। একটিতে জয় এবং সমান ম্যাচে পরাজয়ে র‍্যাঙ্কিংয়ে অবনমিত হয়েছিল হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দলের। সেই দুঃখ ঘোচাতে এবার নিজ আঙিনায় মালদ্বীপকে আতিথ্য দিচ্ছে বাংলাদেশ। যে দলটি ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামছে, যাদের বিপক্ষে সর্বশেষ তিন ম্যাচই অপরাজিত, সেই মালদ্বীপ অন্তত তপু বর্মণ-শেখ মোরসালিনদের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ হওয়ার কথা নয়।

কিন্তু চলতি বছরটা যে লাল সবুজের দলটির জন্যও সুখকর নয়। ছয় ম্যাচের মাত্র একটিতে জয় পাওয়া বাংলাদেশের সময়টাও ভালো যাচ্ছে না। হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে তাই মালদ্বীপকে হারানোর প্রত্যয় ক্যাবরেরার। পারিবারিক সমস্যার কারণে নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে ছাড়াই আজ মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে দু’দলের লড়াই। ১৬ নভেম্বর একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচ খেলবে দু’দল।
বাফুফের নতুন নেতৃত্ব আসার পর এই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। মালদ্বীপ ম্যাচ দেখার জন্য টিকিটের চাহিদাও তুঙ্গে। এবার সৌজন্য টিকিটও দিচ্ছে না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। খেলা দেখতে হলে ব্যাংক থেকে ক্রয় করতে হবে টিকিট। গতবারের চেয়ে এবার টিকিটের মূল্যও বেশি। ভিআইপি ৮০০, ক্যাটেগরি ওয়ান ৫০০ ও ক্যাটেগরি দুই টিকিটের মূল্য ৩০০ টাকা। টিকিট নিয়ে দর্শকদের আগ্রহে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে বাংলাদেশ-মালদ্বীপ প্রীতি ম্যাচটি।
কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার জন্যও মালদ্বীপ ম্যাচ দুটি এসিড টেস্ট। ডিসেম্বরে চুক্তি শেষ হতে যাওয়া এ স্প্যানিয়ার্ডের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বছরের শেষ দুটি ম্যাচের ওপর। যদিও ভবিষ্যৎ নিয়ে না ভেবে মালদ্বীপকে হারানোর ছক কষছেন তিন বছর ধরে জাতীয় দলের দায়িত্ব পালন করা ক্যাবরেরা। গতকাল ম্যাচ-পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ক্যাবরেরা, ‘দলের অবস্থা ভালো; সবাই খুব ইতিবাচক আছে। দলকে আমার কাছে খুব ইতিবাচক দেখাচ্ছে। আমরা বেশ কয়েকটি ট্রেনিং সেশন করেছি, দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি, আমি দলের মধ্যে খুবই ইতিবাচক এনার্জি দেখতে পেয়েছি এবং সবার ভেতরে দেখা যাচ্ছে মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচে ভালো করার মানসিকতা।’
এই বছর ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে শুধু হারই ছিল না, ১৩ গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের জালে দিতে পেরেছে মাত্র একটি গোল, সেটাও ভুটানের বিপক্ষে। মালদ্বীপ ম্যাচে স্বাগতিকরা পাচ্ছে না গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার বিশ্বনাথ ঘোষকে। ইনজুরির কারণে তাঁর ছিটকে যাওয়া দলে সৃষ্টি হয়েছে বড় শূন্যতা। সেই শূন্যতা গোছানোর জন্য তৈরি আছেন দুই ভাই সাদ উদ্দিন এবং তাজ উদ্দিন। রাইটব্যাকে এ দু’জনের যে কোনো একজনের শুরুর একাদশে খেলার সম্ভাবনা আছে।

যদিও বাংলাদেশের বড় সমস্যা স্কোরিং। ভুটানের বিপক্ষে জেতা ম্যাচে গোল করেছিলেন মোরসালিন। আজও কিংসের এ তারকার দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ। মোরসালিনও নিজেকে মেলে ধরতে তৈরি, ‘ঘরের মাঠের খেলা, মালদ্বীপের সঙ্গে দুটি ম্যাচ আমরা জয়ের বিকল্প কিছু দেখছি না। এখন গোল কে করবে, সেটা বলতে পারছি না। তবে আমাদের গোল করতে হবে, জিততে হবে– এটাই আমাদের লক্ষ্য। এখন আমাদের একটাই লক্ষ্য, মালদ্বীপের বিপক্ষে জিততে হবে।’

ফেডারেশনের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে ম্যাচের বাইরে থাকা মালদ্বীপ সর্বশেষ মাঠে নেমেছিল এই কিংস অ্যারেনাতেই। ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর ফিফা বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ২-১ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ দল। সেই ম্যাচে গোল করেছিলেন রাকিব এবং ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। এবারও তাদের পানে তাকিয়ে স্বাগতিকরা। অধিনায়ক তপু বর্মণও মঙ্গলবার শোনালেন আশার কথা, ‘এটা ঠিক, মালদ্বীপ এ বছর ম্যাচ খেলেনি, তাই বলে তাদের হালকা করে দেখার কিছু নেই। আমাদের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। আশা করি, মালদ্বীপকে হারাতে পারব।’