ট্রেনে যশোর থেকে ঢাকায় অফিস করার সময়সূচি চান যশোরবাসী

প্রকাশিত: ৫:৪৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪

যশোর প্রতিনিধিঃ

ট্রেনে যশোর থেকে ঢাকায় অফিস করার সময়সূচি ও পদ্মাসেতু হয়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকা যাওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে রেলপথ অবরোধ করেছে যশোরবাসী। মঙ্গলবার দুপুরে যশোর রেলওয়ে জংশনে ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে দিয়ে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।

দেড়ঘণ্টাব্যাপি অবরোধের পর যশোরের জেলা প্রশাসকের অনুরোধে অবরোধ তুলে নেন বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ। তবে দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।দাবি-দাওয়া তুলে ধরে বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন বলেন, যশোর-ঢাকা-পদ্মাসেতু লিংক প্রোজেক্টের উদ্বোধনী দিনে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে দুটি ও দর্শনা-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে দুটি ট্রেন চালু, নিজ শহর (যশোর) থেকে প্রতিদিন ঢাকায় অফিস করার জন্য ট্রেনের সময়সূচি তৈরি করা, আন্তঃনগর ট্রেনে সুলভ বগী যুক্ত করা, ট্রেনের ভাড়া বাস ভাড়া থেকে কম রাখা, ট্রেনের টিকিট প্রাপ্তির সহজ পদ্ধতি চালু করা, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা এবং দর্শনা-খুলনা রেলপথকে দ্রুত ডবল করাসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে চলেছি।

তিনি বলেন, শোনা যাচ্ছে খুব দ্রুতই পদ্মবিলা জংশন-নড়াইল-ভাঙ্গা হয়ে ঢাকায় রেল চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে। গত ২৪ নভেম্বর ঢাকা-নড়াইল-খুলনা রুটে পরীক্ষামূলক রেল চলাচল করেছে। কিন্তু যশোরে এখনও এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে নতুন এই রুটে যশোর থেকে কখন, কীভাবে এবং কয়টি ট্রেন চলাচল করবে তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। এ কারণে আমরা আমাদের স্বপ্ন বাঁচাতে, পদ্মাসেতু রেল প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকা যাওয়ার জন্য এই রেল অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছি। যশোরের জেলা প্রশাসকের বক্তব্যে আশাবাদী হয়ে আমরা কর্মসূচি সমাপ্ত করেছি। তবে যশোরবাসীর দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচি অর্থাৎ পূর্ণ রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।মঙ্গলবার দুপুর ১টায় রেল অবরোধ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর দুপুর পৌনে ২টায় বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি জংশনের আউটার সিগন্যালে আটকা পড়ে। এরপর অবরোধের খবর পেয়ে রেল জংশনে ছুটে আসেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম।

আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যশোরের মানুষ রেলের ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিক আন্দোলন করে চলেছে। তিনি এইসব দাবি-দাওয়া মন্ত্রিপরিষদ এবং রেল মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছেন। এই রেল অবরোধ কর্মসূচি এবং ন্যায়সঙ্গত ও যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে তিনি আবারও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। এ সময় তিনি যাত্রী ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান।

বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান ভিটুর সভাপতিত্বে অবরোধ সমাবেশে বক্তব্য দেন কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুর রহমান হিরু, ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, সংস্কৃতিজন হারুন অর রশিদ, তসলিমুর রহমান, অধ্যক্ষ শাহীন ইকবাল, যুগ্ম সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান মিলন, প্রবীণ বামনেতা হাসিনুর রহমান, যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, লোকসমাজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আনোয়ারুল কবীর নান্টু, যশোর শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু, যশোর আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা খন্দকার আজিজুল হক মনি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোবাশ্বের হোসেন বাবু, রেলবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মঈনুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম, শংকরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বুলবুল, বৈষম্যবিরোধ ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান, সদস্য সচিব জেসিনা মুর্শিদ প্রাপ্তি, আন্দোলনের নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ শেফার্ড প্রমুখ।