লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লোকসানে দুর্দিন নেমে এসেছে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা তাঁতিদের। আধুনিকতার যুগে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে গুণতে হচ্ছে লোকশান। কাজের অভাবে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন তারা।
উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন কাকিনার তাঁতশিল্পীরা। একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তাঁতের কাজ। অনেকেই এ পেশা ছেড়েছেন। বাপ-দাদার পেশা বলে অনেকে আগলে রেখেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় কাকিনা তাঁতিপাড়া গ্রামের শফিয়ার রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, এটা আমার বাপ-দাদার পেশা। ছাড়তে না পারলেও লোকসান ঠিকই গুনতে হচ্ছে তাকে।
আরেক তাঁতি আমজাদ হোসেন বলেন, মূলধন যোগান ও পণ্য বিপণনের ব্যবস্থা করা গেলে আবারও ঘুরে দাঁড়াবে এই শিল্প। এতে ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি বাড়তি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
কাকিনার তাঁত শ্রমিক মনোয়ারা বেগম বলেন, আমাদের মজুরি কম, কোন বোনাসও নেই। তাত পণ্যের এখন দাম ও বেশি তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা ভালো নেই। খুব কষ্টে দিন পার করছি এখন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাঁতের কাজ করি।
কাকিনা গ্রামে ২ শতাধিক তাঁতি ছিল। বর্তমানে সেই সংখ্যা নেমেছে হাতে গোনা কয়েকটি খুড়িয়ে খুড়িয়ে কিছু চরকা চললেও বেশির ভাগই বন্ধ। বাজারে সুতা-রংসহ সংশ্লিষ্ট পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকাই চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রচার বাড়ানো হলে এই শিল্প তার পুরনো ঐতিহ্য ফিরে পাবে বলে আশা করছেন পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা।
শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতা করছে স্থানীয় প্রশাসন। কাকিনার তাঁত শিল্পের মন্দা ঠেকাতে মূলধন সহায়তা প্রশিক্ষণ ও বাজারজাত করণের সুবিধার দাবি জানিয়েছেন তাঁতি পরিবারগুলো।
কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সুকান্ত সরকার বলেন, তাঁত শিল্প আমাদের একটা অন্যতম ঐতিহ্য। এখানে কিছু তাঁত শিল্প রয়েছে তাদের দক্ষতার মধ্য দিয়ে অতি সুন্দর তাঁত শিল্পের পণ্যগুলো তারা তৈরি করে আসছেন।
তিনি আরও বলেন, সমাজসেবা অফিস থেকে তাদের জন্য ক্ষুদ্রঋণের পাশাপাশি কোন প্রতিবন্ধী থাকলে তাদেরকে ভাতার আওতায় আনা হবে।