সিলেট যেন বিপিএলের অলঙ্কার

প্রকাশিত: ১:১৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫


ক্রীড়া ডেস্ক:

কবিতার মতো প্রাত্যহিক জীবনেও রয়েছে ছন্দ ও অলঙ্কারের ব্যবহার। সেগুলো খেলার মাঠেও খুঁজে পাওয়া যায়। ক্রিকেটে ছন্দের যোগান দেন ক্রিকেটাররা, আর অলঙ্কার পরানোর দায়িত্ব থাকে দর্শকদের কাঁধে। এই দিক থেকে বিপিএল তার ছন্দ ও অলঙ্কার ফিরে পায় সিলেটের খেলায়। অন্তত একাদশ বিপিএলের সিলেট পর্ব প্রায় শতভাগই সেই দিক থেকে সফল। হাত খুলে রান তুলেছেন ব্যাটাররা, চার-ছক্কায় গ্যালারি ভেসেছে উল্লাসে। প্রতিনিয়ত মাঠে এসে সেই উল্লাসকে ভারি করে তুলেছেন সিলেটের ক্রিকেট প্রেমীরা। গতকাল শেষ হয়েছে বিপিএলের সিলেট পর্ব। এখন বিপিএল গড়াবে চট্টগ্রামে। তার আগে দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশে বিপিএল কেমন ছিল, সেটি এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।

 

দর্শকদের কথা বিবেচনা করে স্বাগতিক দল সিলেট স্ট্রাইকার্সের খেলা সবচেয়ে বেশি রাখা হয়েছিল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আরিফুল হকের দল ৫টি ম্যাচ খেলেছে লাক্কাতুরায়। এখানে মোট ম্যাচ ছিল ১২টি। মোট ম্যাচ ডে ছিল ছয়দিন। এর মধ্যে পাঁচদিনই স্ট্রাইকার্স বাহিনী মাঠে নেমেছে। যে দিন সিলেটের ম্যাচ ছিল না, সেদিন ফরচুন বরিশাল-রংপুর রাইডার্সের মতো বড় ম্যাচ ছিল। তাতে দর্শকেরা মাঠে এসেছেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। সাধারণত পছন্দের দল হারলে দর্শকদের মনে আগ্রহ কমে আসে। কিন্তু সিলেটে এমনটি দেখা যায়নি। লাক্কাতুরায় প্রথম দুই ম্যাচে সিলেট হারলেও দর্শক আগ্রহে ভাটা পড়েনি। গতকাল শেষ দিনের খেলায় সিলেট হেরেছে। তবু গ্যালারি ভর্তি দর্শক দলটিকে শেষ পর্যন্ত উৎসাহ দিয়েছে।

একাদশ বিপিএলের শুরু থেকেই রানের বন্যা দেখা যাচ্ছে। মিরপুরের বোলিং বান্ধব উইকেট করেছে বিপরীত আচরণ। সিলেটের উইকেটও তেমন ছিল। অধিকাংশ ম্যাচে দুইশো ছোঁয়া কিংবা দুইশো পেরিয়ে যাওয়া ইনিংস দেখা গেছে। উইকেটে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি বাউন্ডারির সীমানাও কিছুটা ছোট করে দেওয়া হয়েছে এবারের বিপিএলে। তাতে ব্যাটাররা সাহস নিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে পারছেন। মিরপুরের থেকে সিলেটে বেশি রানের ইনিংস দেখা গেছে।

কেবল এবারের বিপিএল নয়, এখন পর্যন্ত সব আসর মিলিয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছে সিলেটের মাঠ। একের পর এক হারতে থাকা ঢাকা ক্যাপিটালস সেই রেকর্ড নিজেদের দখলে নিয়েছে। টানা ছয় হারের পরে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে জয় তুলে নেয় ঢাকা। সেটিও আবার বিপিএলের সর্বোচ্চ রান ও সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে। কেবল তাই নয়, এই ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি তুলে লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম সর্বোচ্চ রানের জুটিও গড়েছেন। দেশি এই দুই ব্যাটারের সেঞ্চুরি ও একাধিক রেকর্ডে একাদশ বিপিএলে এসেছে পূর্ণতা, আর সিলেটের দর্শক সেই পূর্ণতার অন্যতম অনুষঙ্গ।

মিরপুরের মতো সিলেটেও রংপুরের আধিপত্য বজায় ছিল। সিলেট পরপর দুই জয় তুলে দর্শকদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে। বরিশাল তিন ম্যাচ খেলে দুটিতে জয় পেয়েছে। চিটাগংও তুলনামূলক সফল। মিরপুরে অপরাজিত থাকা খুলনা টাইগার্স বড় ধাক্কা খেয়েছিল লাক্কাতুরায়। আর ঢাকা সবচেয়ে বেশি হতাশ করলেও এক ম্যাচ দিয়ে রেকর্ডের পাশাপাশি দর্শকদের মন কেড়ে নিয়েছে। চট্টগ্রাম পর্ব শুরুর আগে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে রংপুর। নুরুল হাসান সোহানের দল অনেকটাই ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। বাকি ছয় দলের মধ্যে লড়াই এখন উন্মুক্ত।