রক্তপাত এড়াতে তদন্তকারীদের সামনে হাজির হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি: ইউন
ডেস্ক রিপোর্ট:
নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের আগে সমর্থকদের উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন তিনি। এতে তিনি বলেছেন, অনাকাঙ্ক্ষিত রক্তপাত এড়াতে তদন্তকারীদের সামনে হাজির হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকালে রাজধানী সিউলে ইউনের ব্যক্তিগত বাসভবনে অভিযান চালিয়ে ইউনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও তদন্ত কর্মকর্তারা।
দেশটির বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানায়, আজ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ‘কার্যকর’ করা হয়েছে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির তদন্তকারী দপ্তরের (সিআইও) বরাতে এ কথা জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারের পর রাজধানী সিউলের মধ্যাঞ্চলের প্রেসিডেনশিয়াল বাসভবন থেকে ইউন সুক-ইওলকে বহনকারী একটি গাড়িবহর বের হয়। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তাকে সিউলের দক্ষিণাঞ্চলে গোওচেয়ন এলাকায় সিআইওর দপ্তরে নেওয়া হয়েছে। গাড়িবহরের পুরো যাত্রাপথ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো সরাসরি সম্প্রচার করে।
গ্রেপ্তার হওয়ার আগে এক ভিডিও বার্তায় সমর্থকদের উদ্দেশে ইউন সুক-ইওল বলেন, এটা অবৈধ তদন্ত। কিন্তু আমি অনাকাঙ্ক্ষিত রক্তপাত এড়াতে সিআইওর তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সামনে হাজির হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এর অর্থ এটা নয় যে, আমি তাদের তদন্তের অনুমোদন দিয়েছি।
এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে একবার ইউন সুক-ইওলকে গ্রেপ্তারে তার বাড়িতে কয়েক ঘণ্টার অভিযান চালান তদন্তকারী কর্মকর্তারা। তবে তার নিরাপত্তা বাহিনীর বাধায় সেই অভিযান ব্যর্থ হয়। এবার দ্বিতীয়বারের মতো অভিযান চালানো হয়।
সবাইকে হতবাক করে দিয়ে গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেছিলেন ইউন সুক-ইওল। কিন্তু তীব্র প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মুখে মাত্র ছয় ঘণ্টার মাথায় তিনি তা প্রত্যাহারে বাধ্য হন।
স্বল্পস্থায়ী এই সামরিক আইন জারির জেরে ১৪ ডিসেম্বর ইউন সুক-ইওলকে দেশটির পার্লামেন্ট থেকে অভিশংসন করা হয়। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে শুরু হয় ফৌজদারি তদন্ত।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাদের তলবে হাজির হতে ইউন সুক-ইওল অস্বীকৃতি জানান। এর জেরে ৩১ ডিসেম্বর ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত। ৬ ডিসেম্বর এর মেয়াদ শেষ হয়। পরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মেয়াদ আদালত বাড়িয়েছেন বলে জানান তদন্তকারী কর্মকর্তারা।