কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম কৈলাইন। উপজেলার জোয়াগ ইউনিয়নের এই গ্রামেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রাচীন নালন্দা মহাবিহার বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পন্ডিত শীলভদ্র। সেই গ্রামেই গড়ে উঠতে যাচ্ছে দেশের প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন গ্রাম (এআই পাওয়ার্ড ভিলেজ)।
ক্ষমতায়ন, উদ্ভাবন ও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি এই তিনটি স্লোগান ধারণ করে ঐ গ্রামের কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে। পাটোয়ারি ফাউন্ডেশন নামের একটি দাতব্য সংস্থা এই উদ্যোগ গ্রহণ করে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। জাতিংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এর আর্থিক সহযোগিতায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি ডি- রেডি এবং বাংলাদেশের এআইআইটি সংস্থার প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানা গেছে।
কৈলাইলন তুলপাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন পাল কার্যক্রম সম্পর্কে জানিয়েছেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন গ্রাম’ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে দুইটি দল গঠন করা হয়েছে। একটি দলে কৈলাইন-তুলপাই উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ২০ জন শিক্ষার্থী সদস্য রয়েছে। যারা মেধাবী এবং উদ্যমী। অপর একটি দলে গ্রামের অসহায় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ২০ জন সদস্য রয়েছে। সেই লক্ষ্যে দুইটি দলকে পৃথকভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। পাটোয়ারি ফাউন্ডেশন তাদেরকে উন্নতজাতের পেঁপে, মরিচ, শাকসবজির চারা এবং মুরগির বাচ্চা প্রদান করবে। যাতে এগুলো লালন-পালন করে তারা নিজেদের পরিবারকে নিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারে।
তিনি আরো জানিয়েছেন, গত ১৬ জানুয়ারি সকাল থেকে শিক্ষার্থী দলটিকে কৈলাইন- তুলপাই উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে কর্মশালার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। অপর দলটিকেও এর আগে গ্রামেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ড. আলমগীর হোসেন, ড. পারভিন আখতারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ দল সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি ডিজিটাল রিডনেস অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্ট সিস্টেমস লি. (ডি- রেডি)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ড. আলমগীর হোসেন বলেন, দলের সদস্যরা পেঁপে, মরিচ, শাকসবজির চারা এবং মুরগির বাচ্চা আধুনিক ব্যবস্থাপনায় লালন-পালন করবে। পাঁচ দিন পর পর এগুলোর ছবি তুলে আপলোড করবে। যে কোনো রোগ বা সমস্যা ধরা পরলে সেগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় সমাধান করবে। এরই মধ্যে কৈলাইন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট আমরা ল্যাপটপ, পানি এবং মাটি পরিক্ষার সেন্সর, আইপেড, স্মার্টফোন, প্রজেক্টর এবং ‘এআই ইন স্কুল’ নামের বই সরবরাহ করেছি।