নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের সব বোর্ড পরীক্ষা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয় অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) খাতা। কারণ, এতে দ্রুত সঠিক মান যাচাই, সময় সাশ্রয়, পরিসংখ্যান বিশ্লেষণের সুবিধা পাওয়া যায়। ওএমআর খাতা ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে— খাতা মূল্যায়নের পর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিপুল হলেও দ্রুত ফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজে ওএমআর খাতায় পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। কলেজটি অধিভুক্তির আট বছর পার করলেও এখনও শিক্ষার্থীরা ম্যানুয়াল খাতায় চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেন। এতে ফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা, পরীক্ষায় অংশ নিয়েও অনুপস্থিত থাকাসহ নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।
যদিও ২০২৩ সালে সাত কলেজের চূড়ান্ত পরীক্ষায় ওএমআর খাতা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। সে বছরের ১০ অক্টোবর ওএমআর খাতা ব্যবহারের বিষয়টি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরীর স্বাক্ষর করা একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল। যদিও অদৃশ্য কারণে সেটি বাস্তবায়ন হয়নি।
সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন সাত কলেজের সাবেক সমন্বয়ক, ঢাকা কলেজের সাবেক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার। তিনি অভিযোগ করেছেন– ‘৬ বছর আগে সাত কলেজের জন্য কোটি টাকার ওএমআর খাতা কিনে গোডাউনে রাখা হয়। সে খাতার বস্তা আজ পর্যন্ত কেউ খুলে দেখেনি।’দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে আরও কিছু অসংগতির কথা তুলে ধরেছেন আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার। তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়। তবুও বলতে বাধ্য হচ্ছি, অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ চালানোর মতো প্রশাসনিক ও আধুনিক কারিগরি দক্ষতা ও লোকবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই। তারা আন্তরিকও নয়। এখনও পুরোনো পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীল তারা। এক্ষেত্রে ৭ কলেজ অনেক এগিয়ে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও বেশ এগিয়ে। আমি ঢাকার দুটো ঐতিহ্যবাহী কলেজে চাকরি করেছি। একটি ঢাকা কলেজ (১৮৪১), আরেকটি কবি নজরুল সরকারি কলেজ (১৮৭৪)। এ দুটো কলেজেরই অধ্যক্ষ ছিলাম। এই দুই কলেজই অনলাইন ভর্তি, ক্লাস, পরীক্ষা, কার্যক্রম, আর্থিক লেনদেন, ডাটাবেজ ও অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফল নির্ণয়ে অস্বাভাবিক অগ্রগতি করেছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগের ৩০-৫০ জন ছাত্রের ফল এখনও ম্যানুয়ালি তৈরি করা হয়। তাও তৈরিতে কত সময় নেয়, সবাই জানি। মাঝে মাঝে পত্রিকার শিরোনামও হয়। সেখানে সাত কলেজের কোনো কোনো বর্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩-৫ হাজার। আর এই বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফল এখনও ম্যানুয়ালি ২-৩ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তৈরি করেন। আর্থিক লাভ অনেক বেশি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এটি হাতছাড়া করতে রাজি নন। আবার কমিটির ভেতর নিজেদের সহকর্মীদের সঙ্গেও শেয়ার করতে রাজি নন। ফলে ফল তৈরিতে কয়েক মাস লেগে যায়। অথচ কলেজকে দায়িত্ব দিলে এটি ৫-৭ দিনে তৈরি করা সম্ভব। শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও এখন লাখ লাখ শিক্ষার্থীর ফল খুব দ্রুত তৈরি করে
সাত কলেজের জন্য ওএমআর খাতা কেনা হলেও ব্যবহার করা হয়নি উল্লেখ করে আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, আমি সাত কলেজের সমন্বয়ক ছিলাম। আমরা পরীক্ষার খাতা ওএমআর করার চাপ দিলাম, যাতে দ্রুত ফল প্রকাশ হয়। তখন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন (সাবেক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি) অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ দায়িত্ব পান। ৬ বছর আগেই দ্রুত ওএমআরের কয়েক কোটি টাকার খাতা কিনে সাত কলেজের গোডাউনে রাখা হয়। সেটি আর বাস্তবায়ন হয়নি। সে খাতার বস্তা আজ পর্যন্ত কেউ খুলেও দেখেনি। নিশ্চয়ই উই পোকার খাদ্য হয়েছে। এখানে সব চলছে পুরোনো নিয়মে। অনেকের বিশাল আর্থিক সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে এটি বাস্তবায়ন হলো না।
তিনি বলেন, আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষক সাত কলেজের এসব বিশাল অঙ্কের আর্থিক সুবিধা পান না, তাদের কাজই হলো সাত কলেজের বিরোধিতা করা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উসকে দিতে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া কয়েকজনের অভ্যাসে দাঁড়িয়েছিল। যেন সাত কলেজের জন্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যত অধঃপতন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষক কামরুল ইসলাম মামুনের কাজই ছিল নিয়মিত ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়া। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আগে ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের সব সরকারি-বেসরকারি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল।
সাত কলেজের সাবেক এ সমন্বয়ক বলেন, আমার শ্রদ্ধেয় বেশিরভাগ শিক্ষকের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শতাধিক সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো ভিসি আর ট্রেজারার হওয়ার দৌড়ে থাকেন। সম্প্রতি শিক্ষা উপদেষ্টা এ নিয়ে কটাক্ষও করেছেন, যা মিডিয়ায় এসেছে। অন্যত্র বেশি বেতনে শিক্ষক হন। ৫-৭টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত এখনো অন্যরা সার্টিফিকেট বিক্রি করে চলছে। সরকারের বিভিন্ন লাভজনক সংস্থায় পদায়ন পেতে অস্থির থাকেন। বিদেশে গেলে আসেন না, আসতেও চান না, অতিরিক্ত অবস্থান করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, আর্থিক কেলেঙ্কারি কত না পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে। পিএসসি নিয়েও কেলেঙ্কারি কম নেই।
প্রশ্ন রেখে আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, অধিভুক্তির ৮ বছর হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা পরিস্থিতির সমাধানে কি ভূমিকা পালন করেছেন? আর্থিক বরাদ্দ, আলাদা কর্মকর্তা ও কর্মচারী, আলাদা বিল্ডিং, সাত কলেজের জন্য অতিরিক্ত একজন প্রো ভিসি (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব ছিল), সাত কলেজের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও পিএইচডি বৃত্তি প্রদান, ডাটাবেজ তৈরি, অটোমেটেড ফলাফল নির্ণয়, ল্যাবরেটরি সাপোর্ট, সিলেবাস নিয়মিত আপডেট, একই প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের পরীক্ষা কোন কাজটি হয়েছে?
এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধিভুক্তি বাতিল হওয়ায় নতুন কাঠামোতে সাত কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়নে সত্যিকারের পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
মন্তব্য না করেই কল কেটে দেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক
সাত কলেজের সাবেক সমন্বয়কের করা এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরীর সঙ্গে। কলেজের চূড়ান্ত পরীক্ষায় ওএমআর খাতা ব্যবহার করা হয় না জানিয়ে ‘এখন মিটিংয়ে আছেন’ বলে কল কেটে দেন তিনি।
বহুমুখী সংকটে বিপর্যস্ত শিক্ষার্থীদের জীবন
বিগত বছরগুলোতে ফল প্রকাশে দীর্ঘ সময় লাগা, পরীক্ষা দিয়েও অনুপস্থিত থাকা, সুনির্দিষ্ট সিলেবাস না থাকা, গণহারে ফেল, ফল বিপর্যয়ের কারণ না জানা, অবকাঠামোগত সমস্যা, অব্যবস্থাপনা, প্রশাসনিক প্রতিবন্ধকতা, যথাসময়ে পরীক্ষা না হওয়াসহ নানা জটিলতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। এসব কারণে তাদের শিক্ষা কার্যক্রমের গতি ব্যাহত হয়েছে এবং মানসিক চাপেও পড়েছেন।
আবার কলেজগুলোতে শিক্ষার মান উন্নত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যার ফলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ। এসব কারণেই ধীরে ধীরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জোরালো হয়েছে।সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের ফোকাল পারসন আব্দুর রহমান বলেন, ঢাবি অধিভুক্তির ফলে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত হয়েছেন। অনেক সমস্যা মাথায় নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে শিক্ষাজীবন শেষ করতে হয় তাদের। প্রচুর সংকট ও অব্যবস্থাপনা এখানে, যার কোনো সমাধান এই দীর্ঘ সময়জুড়ে করা হয়নি। অনেকেই ঢাবির অব্যবস্থাপনার কারণে হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছেন। তারা (ঢাবি) সবসময় নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছে। সাত কলেজের উন্নয়নে কিছুই করেনি। সংকট সমাধানে নেয়নি কোনো ব্যবস্থা। আমরা এসবের ব্যাপারে অনেক কথা বলেছি। কিন্তু সমাধান পাইনি। সে জায়গা থেকেই পরবর্তী সময়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের দাবি জোরালো হয়েছে এবং সেটি এখন বাস্তবায়নের পথে আছে।
এ শিক্ষার্থী বলেন, আমরা বিশ্বাস করি সাত কলেজ স্বতন্ত্র পরিচয় ও বিশ্ববিদ্যালয় হলে সংকটগুলো কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। আমরা স্বমহিমায় নিজেদের জায়গা করে নিতে পারব। যদিও শিক্ষা সিন্ডিকেট, লোপাটকারীরা আমাদের বাধাগ্রস্ত করতে অনেক চেষ্টাই করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত তারা কেউ সফল হয়নি। সাত কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিজয় হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকছে না সাত কলেজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হবে না। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এর মধ্য দিয়ে ঢাবি থেকে সাত কলেজকে পৃথকীকরণ কার্যক্রমের সূচনা হচ্ছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয় সংলগ্ন সভাকক্ষে ঢাবি প্রশাসনের সঙ্গে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে লিখিত বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ বেশকিছু সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। সেগুলো হলো–
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের সম্মানজনক পৃথকীকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২. অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এক বছর এগিয়ে এনে এ বছর থেকেই অর্থাৎ ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি না নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৩. শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরের শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সভায় জোর সুপারিশ করা হয়।
৪. ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী আসন সংখ্যা ও ভর্তি ফি নির্ধারণসহ যাবতীয় বিষয়ে মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
৫. যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের অধীনে রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বশীল থাকবে, যাতে তাদের শিক্ষাজীবন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
চলমান চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো শেষ করতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে : ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ
অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত হলেও বর্তমান শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখা এবং চলমান চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ করার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সাত কলেজ সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস।
তিনি বলেন, অধিভুক্তি বাতিল হলেও শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার জন্য সভায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরা যেকোনো মূল্যে এখনকার চলমান চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো শেষ করতে চাই। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে সোমবারের যে পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে, সেটিও পরে আরেকটি তারিখ দিয়ে শেষ করা হবে। কোনো ছাত্রের শিক্ষাজীবন যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, সরকারি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হয়েছিল শেখ হাসিনা সরকারের আমলে। তবে এর সঠিক কোনো মূল্যায়ন আমরা দেখতে পাইনি। আমাদের এখন যেটি মনে হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন যারা ভিসি ছিলেন তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণেই সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন করা হয়েছিল। তবে এখন সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষক ও শিক্ষাবিদদের মতামতের ভিত্তিতে দাঁড় করানো হবে নতুন এক কাঠামো।