বিদ্যালয় মাঠে পোড়ানো হচ্ছে পাথর ও বিটুমিন, ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে সড়ক কাজের নির্মাণ সামগ্রী রাখায় ক্লাস কার্যক্রম ও খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা। উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের আকালু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বিটুমিন ও পাথর পোড়ানোর কারণে কালো ধোয়া ও গাড়ি চলাচল করায় ক্লাস কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয় মাঠজুড়ে সড়কে ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ঘেঁষে রাখা হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্যাস সিলিন্ডার। এতে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। মাঠের এক পাশে বিটুমিন পোড়ানো হয়। মাঝখানে বালু, পাথর ও মিক্সার মেশিন ও একটি লোড গাড়ি। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠটি পুরো দখলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের বারান্দায় খেলাধুলা করছে শিশু শিক্ষার্থীরা। মাঠ দখলে থাকায় নিয়মিত অনুশীলন না করার কারণে কয়েকদিন পরই আন্ত:স্কুল প্রতিযোগিতা, উপজেলা পর্যায়ে টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়ন-নিকরাইল বাজার ভায়া চর অলোয়া সড়কের সংস্কার কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাপস ট্রেডার্স। এলজিইডির আওতাধীন প্রায় ১ কোটি ১৩ লাখ টাকার ৩.৮০ কিলোমিটার সড়কের কাজ করছে প্রতিষ্ঠান। এর কাজ শেষ হবে চলতি বছরের মার্চ মাসে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়ে আসলেও খেলাধুলা করতে পারি না। মাঠে বালু পাথর ফেলা হয়েছে। মাঠে মধ্যে যখন মবিলসহ বিভিন্ন জিনিস পোড়ানো হয় তখন কালো ধোঁয়ায় থাকা যায় না। এছাড়া বিকট শব্দে জানালা বন্ধ করে পড়তে হয়। আমরা মাঠে ফুটবল, ক্রিকেট খেলতে চাই।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাপস ট্রেডার্সের প্রতিনিধি আবুল হোসেন বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে তো কোন সমস্যা হচ্ছে না। খুব দ্রুতই কাজ শেষ হবে। এরপর নির্মাণ সামগ্রীগুলো সরিয়ে নেয়া হবে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয় খোলার আগে থেকেই মাঠে এসব নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। শিশুরাও মাঠে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে ৭২জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
আকালু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ বলেন, মাঠে কাজ করার সময় ক্লাস নেয়া সম্ভব হয় না। বিদ্যালয়ের জানালা দরজা বন্ধ রেখে ক্লাস নিতে হয়। কিছুদিনের মধ্যেই বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। বিষয়টি এলজিইডি, শিক্ষা অফিসসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম বলেন, কোথাও বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ঠিকাদার মাঠ ব্যবহার করছে না। সেখানে যদি জায়গা না পাওয়া গেলে সড়কের ঢালাইয়ের কাজ গাজীপুরের কালিয়াকৈর বা চন্দ্রা থেকে করে আনতে হবে। এতে কাজ নিম্নমানের হবে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুব হোসেন বলেন, নির্মাণ সামগ্রী রাখার বিষয়টি বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক অবগত করেছেন দুইদিন আগে। বিদ্যালয় খোলার আগে থেকে সেখানে এসব নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে। এতে শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় সেগুলো সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার পর সেগুলো সরানো হবে বলে এলজিইডি ও ঠিকাদার জানিয়েছেন।