উপদেষ্টার এপিএস সাঁতারের কমিটিতে

প্রকাশিত: ১:০১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক:

ক্রীড়াঙ্গনে সংস্কারের অংশ হিসেবে গত ১৪ নভেম্বর ৯ ফেডারেশনে অ্যাডহক কমিটি গঠন করে সরকার। আড়াই মাস পর মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সাঁতার, টেবিল টেনিস, ভলিবল, কারাতে, ভারোত্তোলন, শরীর গঠন ও ফেন্সিং—এই সাত ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

৫ আগস্ট সরকার বদলের পর ১১ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন ফেডারেশনে নানা পদে থাকা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ১৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল ঘোষিত সাঁতার ফেডারেশনে সদস্য তালিকায় রাখা হয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেনকে।

উপদেষ্টার একান্ত সচিব কেন সাঁতারের কমিটিতে জানতে চাইলে সার্চ কমিটির আহ্বায়ক জোবায়দুর রহমান বলেন, মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার আছে কিছু যোগ–বিয়োগ করার। সে হিসাবে কারও যোগ্যতা অনুযায়ী মন্ত্রণালয় মনোনয়ন দিতেই পারে।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ভিন্ন ভিন্ন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ফেডারেশনের বিদ্যমান কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ২০১৮-এর ২১ ধারা অনুযায়ী ভেঙে অ্যাডহক কমিটি করা হয়েছে। আগেরবার দেওয়া ৯ কমিটির চেয়ে এই ৭ কমিটিতে তুলনামূলক সাবেক খেলোয়াড়ের সংখ্যা বেশি। সার্চ কমিটির দেওয়া প্রস্তাবিত তালিকায় আগেরবার যতটা যোগ–বিয়োগ হয়েছে, এবার খুব বেশি হয়নি বলে জানা গেছে।

কমিটির এক সদস্য জানান, তাদের দেওয়া নাম থেকে দু–একটি ফেডারেশনে শীর্ষস্থানীয় পদে বদল হয়েছে। তবে আগে ঘোষিত ৯ কমিটির কয়েকটিতে ছাত্র প্রতিনিধি থাকলেও এবার কোনো কমিটিতেই ছাত্র প্রতিনিধি নেই। টেবিল টেনিস, ভারোত্তোলন ও শরীর গঠনের কমিটি ১৭ সদস্যের, বাকিগুলো ১৯ সদস্যের।

সাত ফেডারেশনের সভাপতি হয়েছেন এমন দুজন, যারা সংশ্লিষ্ট খেলায় আগে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ফেন্সিংয়ের সভাপতি হয়েছেন কামরুল ইসলাম, ভারোত্তোলনে মহিউদ্দিন আহমেদ। ক্রীড়াঙ্গন থেকে সভাপতি করার দাবি অনেক দিন ধরে করে আসছিলেন সাবেক ভারোত্তোলক মহিউদ্দিন আহমেদ। তার দাবি পূরণ হয়েছে। খেলোয়াড় থেকে সভাপতি হয়ে উচ্ছ্বসিত মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার পরপরই খেলোয়াড় থাকাকালীন যুগ্ম সম্পাদক হয়েছিলাম ভারোত্তোলন ফেডারেশনের। ১৯৭৬ সাল থেকে ৪০ বছর ছিলাম সাধারণ সম্পাদক। সর্বশেষ কমিটিতে সহসভাপতি। আশা ছিল একদিন সভাপতি হবো। ফেডারেশন সভাপতি হতে লাগল ৫৩ বছর। এখন আরও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে পারবো।

আগে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, এমন দুজন আবার ফিরে এসেছেন এই পদে। সাঁতারে মাহবুবুব রহমান শাহীন ও কারাতেতে মোয়াজ্জেম হোসেন সেন্টু। শেষের জন কারাতের সর্বশেষ কমিটিতে সহসভাপতি ছিলেন।

তবে ভলিবলে অবসান হয়েছে আশিকুর রহমান মিকু অধ্যায়ের। দুই দশকের বেশি সময় ভলিবলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। সাবেক সাঁতারু আন্তর্জাতিক পদকজয়ী মাহফিজুর রহমান সাগর আছেন সাঁতারের কমিটিতে। সাঁতারে যুগ্ম সম্পাদক হয়েছেন সাবেক সাঁতারু নিবেদিতা দাস।

সাঁতারসংশ্লিষ্ট এক সংগঠক জানান, দু-একটি নাম ছাড়া তাঁর চোখে কমিটি নিয়ে বিতর্ক নেই। টেবিল টেনিসের কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে শক্তিশালী প্রার্থী ছিলেন সাবেক জাতীয় চ্যাম্পিয়ন সাইদুল হক সাদী। কিন্তু তিনি কমিটিতেই জায়গা পাননি।

টিটির কমিটিতে সহসভাপতি হিসেবে জায়গা পেয়েছেন আগের কমিটির সহসভাপতি খোন্দকার হাসান মুনীর। ১৯৮৭ সালে জোবেরা রহমান লিনুকে হারিয়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া তাহমিনা তারমিন বিনুও হয়েছেন সহসভাপতি।

ভারোত্তোলনের কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে সাবেক ভারোত্তোলক আজহারুল ইসলাম, ফিরোজা পারভীন ও জহুরা আক্তারকে। কিছু অচেনা মুখও আছে। ফেন্সিংয়ের সাধারণ সম্পাদক পদে আনা বসুনিয়া এম আশিকুল ইসলামের নামের পাশে পরিচিতি হিসেবে লেখা, পৃষ্ঠপোষকও এই খেলায় আগ্রহী।