নুর-রেজার অভিযোগের বিরুদ্ধে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি

প্রকাশিত: ৭:৪৪ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২৩

গণঅধিকার পরিষদের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নুরুল হক নুর এবং রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সংগঠনের সচেতন সদস্যরা।আজ মঙ্গলবার রাতে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও শৃঙ্খলা এবং অডিট কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামানকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।

বৈঠকে বলা হয়, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগণ সবাই গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সচেতন সদস্য। গত ১৮ জুন আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার বাসার ছাদে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ড. রেজা কিবরিয়ার আলোচিত-সমালোচিত ইনসাফ কমিটির মিটিংয়ে যাওয়া ও সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কথিত সদস্য মেন্দি সাফাদির সঙ্গে দেখা করার কারণ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। ওই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুগত সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে সভার সভাপতি ড. রেজা কিবরিয়া সভাস্থল ত্যাগ করেন এবং সঞ্চালক সভা মুলতবি ঘোষণা করেন।

পরের দিন গত ১৯ জুন সদস্য সচিব নুরুল হক নুর একটি সভার আহ্বান করেন। যা গঠনতন্ত্রের ৩৬(খ), ৩৭(ক), ৩৮, ৩৯(খ) ও ৩৯ (ঘ) অনুযায়ী অবৈধ। তবুও আমাদের কয়েকজন দলের স্বার্থে সেখানে উপস্থিত হই এবং কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি বন্ধ করে আহ্বায়ক দেশে আসার পূর্ব পর্যন্ত প্রটোকল অনুযায়ী ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খানকে অন্তর্র্বতীকালীন আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করার পরামর্শ দেই। কিন্তু উপস্থিত সবার মতামতকে উপেক্ষা করে একটি বানোয়াট প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। যেখানে মুহাম্মদ রাশেদ খানকে সরাসরি দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ঘোষণা করা হয়। অবৈধ এই সিদ্ধান্তে দলের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

এদিকে আজ ২০ জুন তারিখে আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার দলের ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান ও সদস্য সচিব নুরুল হক নুরকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হাসান আল মামুনকে ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ঘোষণা করেন। আমরা মনে করি, আহ্বায়কের এই কাজটি সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। এমন পাল্টাপাল্টি কার্যক্রমে দলে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

এ অবস্থায়, আমরা কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্যগণ গঠনতন্ত্রের ১৮-গ-৮ ধারার ক্ষমতাবলে অত্র ঘোষণায় স্বাক্ষর করছি এবং দলের এরূপ পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষের তৎপরতাকে নীতিবহির্ভূত এবং দলের শৃঙ্খলা ও জনমনে দলের ইমেজ ক্ষুণ্নকারী বলে মনে করছি। সেইসাথে ঘটনার তদন্ত ও পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অনুরোধ করা গেল।

তদন্ত কমিটির সদস্যবৃন্দ:

১. কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ ও প্রধান সমন্বয়ক, শৃঙ্খলা এবং অডিট কমিটি।

২. ব্যারিস্টার জিসান মহসিন, যুগ্ম আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ ও প্রধান সমন্বয়ক, আইনজীবী অধিকার পরিষদ।

৩. সাদ্দাম হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ ও উপদেষ্টা, বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ।

৪. জাকারিয়া পলাশ, যুগ্ম আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ ও প্রধান সমন্বয়ক, গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটি।

৫. সাকিব হোসাইন, সহকারী আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ ও প্রধান সমন্বয়ক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক উপকমিটি।
এ ছাড়া উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির ৪৫ জন সদস্য স্বাক্ষর করেছেন।