স্ত্রীর সঙ্গে জোর করে বিকৃত যৌনাচার করা অপরাধ নয়: ভারতীয় হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ১২:০০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

সম্মতি ছাড়া স্ত্রীর সঙ্গে জোর করে বিকৃত যৌনাচার করা কোনও অপরাধ নয় বলে ভারতের একটি হাইকোর্ট রায় দিয়েছে। এই ধরনের অস্বাভাবিক যৌনতার জেরে স্ত্রীর মৃত্যুর পর এক ব্যক্তি নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলেও ছত্তিশগড় হাইকোর্ট তাকে রেহাই দিয়েছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, একজন পুরুষ এবং তার প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রীর মধ্যে অস্বাভাবিক যৌনতা শাস্তির যোগ্য নয় বলে ছত্তিশগড় হাইকোর্ট সাম্প্রতিক একটি রায়ে বলেছে। এই মামলায় এমন একজন ব্যক্তি জড়িত ছিলেন যার স্ত্রী অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্কের পরে হাসপাতালে মারা যান। ডাক্তার বলেছেন, অস্বাভাবিক যৌনতার পর ওই নারীর পেরিটোনাইটিস এবং রেকটাল ছিদ্র হয়ে গিয়েছিল।

 

 

এনডিটিভি বলছে, ভারতীয় আইনে “বৈবাহিক ধর্ষণ” শাস্তিযোগ্য নয়। আর হাইকোর্টের রায়ে এখন অস্বাভাবিক বা বিকৃত যৌনতাকেও শাস্তির আওতার বাইরে রাখা হলো। অস্বাভাবিক যৌনতা এবং অপরাধমূলক হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ওই ব্যক্তি অভিযুক্ত হলেও এখন বলা হচ্ছে, এটি হত্যার সমতুল্য নয়, আর তাই তিনি ট্রায়াল কোর্টে দোষী সাব্যস্ত হলেও হাইকোর্ট থেকে রেহাই পেয়েছেন।

 

ছত্তিশগড় হাইকোর্ট তার রায়ে বলেছে, যদি স্ত্রীর বয়স ১৫ বছরের বেশি হয় তবে স্বামীর দ্বারা “কোনও যৌন মিলন” বা যৌন কাজকে কোনও অবস্থাতেই ধর্ষণ হিসাবে আখ্যায়িত করা যাবে না এবং আর সেইজন্য অস্বাভাবিক বা বিকৃত যৌনাচারের জন্য স্ত্রীর সম্মতি না থাকারও কোনও তাৎপর্য নেই।

তাই আপিলকারীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ এবং ৩৭৭ ধারার অধীনে অভিযোগ আনা যাবে না। রায়ে বলা হয়েছে, “স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে অপরাধটি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারার অধীনে সংশোধনের মাধ্যমে বাতিল করা এবং উভয় ধারার মধ্যে বিদ্বেষের পরিপ্রেক্ষিতে করা যাবে না।”

এনডিটিভি বলছে, সুপ্রিম কোর্ট বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনার জন্য আবেদনের শুনানি করছিল কিন্তু বেঞ্চের নেতৃত্বে থাকা ভারতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় অবসর নিতে চলেছেন বলে সেই শুনানি স্থগিত হয়ে যায়। নতুন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মনে করে, বিবাহের সুরক্ষা অপরিহার্য এবং বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ বলে গণ্য করার প্রয়োজন নেই। তাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না।

শুনানির সময় সরকার আরও বলেছে, দাম্পত্যের ক্ষেত্রে বিবাহিত নারীর সম্মতি রক্ষার জন্য সংসদ বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা প্রদান করেছে।